কর্পোরেট জগতে ক্যারিয়ার গঠনের জন্য বর্তমান সময়ের গ্র্যাজুয়েটদেরকে বেশ কঠিন প্রতিযোগীতার মধ্যে দিয়ে যেতে হয়। বিশ্বায়ন ও উন্নত প্রযুক্তির এই সময়ে বেড়ে উঠা তরুণ গ্র্যাজুয়েটদের কাছ থেকে নিয়োগকর্তাগণও অধিক দক্ষতা প্রত্যাশা পোষণ করে থাকেন। ফলে তারাও চান কেবল সেরা গ্র্যাজুয়েটদেরই তাদের প্রতিষ্ঠানে নিয়োগ দিতে। যারা আগামীতে নেত্বত্ত্ব দিয়ে প্রতিষ্ঠানকে এগিয়ে নিয়ে যাবেন। আর তাই গ্র্যাজুয়েটদেরও উচিত সেভাবে নিজেকে তৈরি করা, বিভিন্ন ইন্ডাস্ট্রি সম্পর্কে ভালো ধারণা লাভ করা যা কাঙ্খিত সেক্টর নির্বাচনে সহায়তা করবে।
মূলত ক্যারিয়ার নির্বাচনের পূর্বে গ্র্যাজুয়েটদের নিজের ভ্যালুস, আগ্রহ, দক্ষতা, ট্যালেন্ট কিংবা ব্যাক্তিত্বের ধরণ কেমন তা জানাও জরুরী। এবং এইসব বিবেচনায় নিয়েই ক্যারিয়ার নির্বাচন করা উচিৎ। চাইলে গুগলের মাধ্যমে ‘সেলফ এসেসম্যান্ট টেস্টেও’ অংশ নিতে পারেন যা আপনাকে আপনার সম্পর্কে একটা পরিষ্কার ধারণা দেবে। তবে আমাদের দেশের আর্থ-সামাজিক পেক্ষাপটে অনেক সময় নিজের পছন্দের চেয়ে পারিবারিক চাহিদা কিংবা পরিস্থিতির কারণে অন্য পেশাকেও বেছে নিতে দেখা যায়।
প্রথমতঃ বিভিন্ন ইন্ডাস্ট্রি সম্পর্কে ভালো ধারণা নিতে হবে, জানতে হবে কোন ইন্ডাস্ট্রি কিভাবে কাজ করে থাকে, প্রত্যেক প্রতিষ্ঠানের আলাদা আলাদা বিভাগ রয়েছে সেখানে লোকজন কিভাবে কাজ করে থাকেন, কিংবা ভবিষতে আর কোন কোন প্রতিষ্ঠান কোন সেক্টরে বিনিয়োগ করতে যাচ্ছেন, কোন সেক্টরে কি রকম কাজের দক্ষতা প্রয়োজন এইসব খুঁটিনাটি সম্পর্কে। সেই সাথে নিজের কি কি দক্ষতা আছে, কোন কোন দক্ষতা অর্জন করতে হবে সেসবের দিকে নজর দেয়াটাও গুরুত্বপূর্ণ। তারপর অভিজ্ঞ ও পরিচিতজনের সহায়তা নিয়ে ক্যারিয়ার নির্বাচন করা যেতে পারে; সম্ভব হলে যে সেক্টরে কাজ করতে আগ্রহী সেই সেক্টরের কিছু প্রতিষ্ঠানের নামের তালিকাও লিপিবদ্ধ করে রাখতে পারেন; তাতে আপনার জন্য প্রস্তুতি নিতে সুবিধা হবে। এক্ষেত্রে এমন প্রতিষ্ঠান নির্বাচন করুন যেখানে আপনি কাজ করে প্রচুর শেখার পাশাপাশি আনন্দও পাবেন। যদি সম্ভব হয় তবে ক্যারিয়ারের স্বল্প ও দীর্ঘ মেয়াদী দু’টো পরিকল্পনা তৈরি করে রাখুন।
বিভিন্ন ইন্ডাস্ট্রি সম্পর্কে ভালো ধারণা নিতে হবে, জানতে হবে কোন ইন্ডাস্ট্রি কিভাবে কাজ করে থাকে
ইন্ডাস্ট্রি সম্পর্কে ধারণা নেবার পর আপনার কাজ হচ্ছে পছন্দমতো একটি নিদিষ্ট সেক্টর বেছে নেওয়া। আর আপনার পরিকল্পনার সুবিধারতে ব্যাংক এবং বিভিন্ন আর্থিক প্রতিষ্ঠানেকে আপনি একটি সেক্টর ধরতে পারেন। আমাদের দেশে একাধিক মোবাইল ও মোবাইল হ্যান্ডসেট কোম্পানি রয়েছে, সুতারাং টেলিকমিউনিকেশনকে আপনি একটি সেক্টর ধরে এগিয়ে যেতে পারেন। বাংলাদেশে রয়েছে অসংখ্য বহুজাতিক প্রতিষ্ঠান, এক্ষেত্রে আপনি বহুজাতিক-এফএমসিজি, বহুজাতিক-টোব্যাকো, বহুজাতিক-ফুটওয়্যার, বহুজাতিক-সিমেন্ট, বহুজাতিক-হোম এপ্লাইন্স, বহুজাতিক-কুরিয়ার সার্ভিস, বহুজাতিক-পেইন্টস এভাবে ভাগ করে নিতে পারেন। আবার রয়েছে শত শত দেশীয় কর্পোরেট হাউজ, গার্মেন্টসসহ অসংখ্য প্রতিষ্ঠান। রয়েছে বিসিএস সহ হাজারো সরকারী ও স্বায়ত্ব শাসিত প্রতিষ্ঠানে কাজের সুযোগ। আপনি আপনার আগ্রহের সেক্টর নির্বাচন করে সামনে এগিয়ে যান।
আবার সেক্টর ঠিক করার পর আপনি প্রতিষ্ঠানের কোন বিভাগে কাজ করতে চান তাও ভেবে রাখতে পারেন যা আপনার জব প্রস্তুতিতে কাজে দেবে। যেমন ধরা যাক আপনি মার্কেটিং নিয়ে পড়াশোনা করছেন সেক্ষেত্রে আপনি এডভারটাইজিং, ব্র্যান্ডিং, মার্কেট রিসার্চ, মিডিয়া প্লানিং , পাবলিক রিলেশন, কাস্টমার সার্ভিস কিংবা সেলস এর যে কোন একটিকে কাজের ক্ষেত্র হিসেবে নির্বাচন করতে পারেন। আর এসব ব্যাপার নিয়ে আপনাকে চিন্তা ভাবনা শুরু করতে হবে বেশ আগেভাগে তাহলে আপনি প্রিপারেশন নিতে হাতে বেশ সময় পাবেন এবং জব পেতে এটি আপনাকে অন্যদের থেকে এগিয়ে রাখবে।
সবার জন্য শুভ কামনা রইল।
পড়ুন – বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্লাসের বাইরে যা করা যেতে পারে!
কর্পোরেট জগতের প্রাথমিক চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় আপনি কতটুকু প্রস্তুত?
Follow me on Facebook . Check out my Website .
2 Comments
[…] […]
[…] […]