দেশ সেরা পাবলিক কিংবা প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তে না পারা কিংবা আশানুরূপ সিজিপিএ না থাকা নিয়ে অনেক সদ্য গ্র্যাজুয়েটদেরকেই হতাশায় ভুগতে দেখা যায়। আনেকে আবার চেষ্টা না চালিয়ে হাল ছেড়ে দেন যা মোটেও উচিৎ নয়। আপনি কোন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পাশ করেছেন তার থেকে আপনি কতটুকু জ্ঞান আর কাঙ্ক্ষিত জবের জন্য প্রয়োজনীয় দক্ষতা অর্জন করেছেন সেটাও কম গুরুত্বপূর্ণ নয়। এটা সত্য যে অল্প কিছু প্রতিষ্ঠান তাদের জব সার্কুলারে নিদিষ্ট সংখ্যাক ইউনিভার্সিটিকে অগ্রাধিকার দিয়ে সার্কুলার প্রকাশ করে থাকে তবে এর মানে এই না যে আপনি শুরুতেই বাতিলের খাতায় চলে গেছেন। আবার অনেকেই সিজিপিএ নিয়েও বেশ দুঃচিন্তা করতে দেখা যায়। এক্ষেত্রে আবার নানা জনের রয়েছে নানা রকম জিজ্ঞাসা । কেউ প্রশ্ন রাখেন “আমি টপ ক্লাস ইউনিভার্সিটি থেকে পাশ করিনি‚ আমি কি ভালো জব পাবো? আমার সিজিপিএ ভালো না‚ আমি কি ভালো জব পাবো না?” বাকি প্রশ্নগুলো অনেকটা এরকমঃ
এমন হাজারো প্রশ্ন আছে ফ্রেস গ্র্যাজুয়েটদের মনে। আর প্রশ্ন থাকাটাই স্বাভাবিক যেহেতু গ্র্যাজুয়েটদের তুলনায় চাকুরীর পরিমাণ অনেক কম। তুমুল প্রতিযোগিতায় নিজেকে প্রমাণ করতে গ্র্যাজুয়েটরা আসলে নানা দুঃচিন্তা আর অনিশ্চয়তায় ভুগে। আর বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্লাস রুম থেকে কর্পোরেট জগৎ সম্পর্কে বিস্তারিত জানার সুযোগ আসলে আমাদের দেশে খুবই সীমিত।
নিজেকে গড়ে তুলুনঃ প্রথমে আসা যাক বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনার সুযোগ নিয়ে। সবাই দেশের টপ ক্লাস বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সুযোগ পাবেনা এটাই স্বাভাবিক। তাই বলে কি আপনি হাত পা গুটিয়ে বসে থাকবেন? মোটেও না। বরং যেখানেই পড়াশোনা চালিয়ে যাচ্ছেন সেখান থেকেই নিজেকে গড়ে তোলার চেষ্টা চালিয়ে যান। কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনে নিজেকে জড়িয়ে নিন। ডিবেট কিংবা ইংলিশ ক্লাবে যোগদান করুন এবং নিজের দক্ষতা বাড়িয়ে নিন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের সামাজিক সংগঠনে যোগদান করে দক্ষতা বাড়িয়ে নিন
শুধুমাত্র কোন সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠনের সদস্য হয়ে থাকলে চলবে না‚ সংগঠন চালানোর দায়িত্বে নিজেকে নিয়ে যেতে হবে। নিজের নেতৃত্বগুণের প্রকাশ ঘটাতে হবে‚ সাংগঠনিক দক্ষতা অর্জন করতে হবে এবং এসব কিছু করতে গিয়ে যেসব সমস্যার সম্মুখীন হবেন সেগুলো সুন্দরভাবে সমাধান করা জানতে হবে। প্রতিনিয়ত যোগাযোগ বাড়াতে হবে আপনার শিক্ষক-সিনিয়র-কর্পোরেট সবার সাথে। প্রয়োজনে জব ফেয়ার তথা ক্যারিয়ার রিলেটেড সেমিনার ওয়ার্কশপে অংশ নিন, প্রফেশনাল প্রশিক্ষণ গ্রহণ করুন আর এসব আপনার দক্ষতা বাড়ানোর পাশাপাশি আত্নবিশ্বাস বাড়াতে সহায়তা করবে যা ইন্টার্ভিউ জয় করতে কাজে আসবে। এবং গ্র্যাজুয়েশনের পর আপনার সিভিতে এই সকল কার্যক্রম সুন্দরভাবে ফুটিয়েও তুলতে হবে।
আবার যারা গ্র্যাজুয়েশনের শেষ দিকে এসে সিজিপিএ নিয়ে দু:চিন্তায় হারার আগে হেরে বসে আছেন তাদেরও উচিৎ পড়াশোনায় অধিক মনোযোগী হবার পাশাপাশি যতটা সম্ভব কো-কারিকুলামের সাথে যুক্ত হওয়া যা আপনার দক্ষতা বাঁড়াতে সহায়ক হবে।
দক্ষতা উন্নয়ন ও জব মার্কেট সম্পর্কে ধারণা পেতে ক্যারিয়ার বিষয়ক ওয়ার্কশপ-সেমিনারে অংশ নিন।
আর যারা কম সিজিপিএ নিয়ে গ্র্যাজুয়েশন শেষ করতে যাচ্ছেন তাদের উচিৎ হবে কাঙ্ক্ষিত জব সেক্টরে ভালো একটি ইন্টারনশিপ যোগাড় করে তাতে অধিক মনোযোগী হওয়া। যাতে করে অধিক কাজ শিখতে পারেন, নিজেকে প্রমাণের ক্ষেত্র প্রস্তুত করতে পারেন।
যাদের গ্র্যাজুয়েশন ইতিমধ্যে শেষ কিন্তু কাঙ্ক্ষিত সিজিপিএ নেই তারা চাইলে ইন্টার্নশিপের সময়ের কাজগুলো সুন্দরভাবে সিভিতে তুলে ধরতে পারেন। ছাত্রাবস্থায় পার্ট টাইম জব কিংবা কোন সামাজিক- সাংস্কৃতিক সংগঠনে জড়িত থেকে থাকলে সেগুলো সিভিতে ফুটিয়ে তোলার চেষ্টা করুন তাতে করে ইন্টার্ভিউ কল পাওয়া সহজ হবে।
আসলে অভিজ্ঞতা থেকে দেখা যায়, কর্পোরেট জগৎকে একটি স্টেডিয়াম ধরলে একজন ফ্রেশার হিসেবে সিজিপিএ হলো সেই মাঠে প্রবেশের টিকেট মাত্র। একবার নিজ যোগ্যতা প্রমাণ করে চাকুরীতে প্রবেশ করে কয়েক বছর কাজ করার পর আপনি কোন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পাশ করেছেন, সিজিপিএ কি ছিলো তারচেয়ে বরং এতোদিনে কি কি কাজ শিখেছেন, আপনি কোন কোন দক্ষতার অধিকারী এবং প্রতিষ্ঠানে কিভাবে অবদান রাখছেন আলোচনায় সেসবই বেশী গুরুত্ব পাবে। আর তাই ভেঙ্গে না পড়ে বরং আপনি আপনার যোগ্যতা, দক্ষতা আর অর্জন সমূহ সিভিতে সুন্দর করে ফুটিয়ে তুলুন, জব মার্কেট সম্পর্কে জানুন, জব সোর্সের উৎস সমূহের মাধ্যমে নিয়মিত জবের খোঁজ খবর রাখুন, প্রয়োজনীয় নেটওয়ার্ক গড়ে তুলুন এবং সাফল্যের পানে এগিয়ে চলুন।
সদ্য গ্র্যাজুয়েটদের দরকারি ৭ পরামর্শ…
কোথায় পাবেন কর্পোরেট জব সার্কুলার?
কর্মক্ষেত্রে দক্ষতা সমূহ যা আপনাকে এগিয়ে দেবে…
কর্পোরেট জগতের প্রাথমিক চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় আপনি কতটুকু প্রস্তুত?
Follow me on Facebook . Check out my Website .