করোনার এই দুঃসময়ে সময়ে অনেক প্রতিষ্ঠান কঠিন চ্যালেঞ্জের মধ্য দিয়ে গেলেও অনেকেই আবার তাদের ব্যবসায়ের উন্নতির ধারা অব্যাহত রাখতে সমর্থ হয়েছেন। আশার কথা হচ্ছে, সাম্প্রতিক সময়ে বেশ কিছু জব সার্কুলার চোখে পড়েছে। স্বল্প পরিসরে হলেও বেশ কিছু কোম্পানি কর্মী নিয়োগ দেয়া শুরু করেছেন এবং প্রায় সব অর্গানাইজেশনই ইন্টারভিউ থেকে শুরু করে পুরো নিয়োগ প্রক্রিয়া অনলাইনেই সম্পন্ন করার চেষ্টা করছেন।
তবে অনলাইন নির্ভর হলেও আপনাকে অবশ্যই একটি নিদিষ্ট নিয়োগ প্রক্রিয়ার মুখোমুখি হতেই হবে, যেখানে আপনি নিজেকে আর নিজের অর্জিত শিক্ষা আর দক্ষতাকে সুচারুরূপে উপস্থাপন করবেন। তাই যে কোন কোম্পানির নিয়োগ প্রক্রিয়ায় অংশ গ্রহণের প্রাক্কালে দরকার পুরো নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পর্কে স্বচ্ছ ধারণা নেয়া যা আপনাকে অন্যসব প্রতিযোগী থেকে এগিয়ে রাখবে।
প্রতিষ্ঠান ভেদে নিয়োগ প্রক্রিয়ায় ভিন্নতা থাকলেও প্রায় সব জায়গাতেই চাকুরী প্রার্থীদের এক বা ততোধিক ইন্টার্ভিউর মুখোমুখি হতেই হয়। এক্ষেত্রে সবারই উচিৎ অনলাইন/সরাসরি ইন্টার্ভিউকে খুব গুরুত্বের সাথে নেয়া। আর যে কোন ইন্টার্ভিউ বোর্ডের মুখোমুখি হবার পূর্বে চাই যথাযথ প্রস্তুতি। যে পদের জন্য ইন্টার্ভিউ দিতে যাচ্ছেন, সেই পদের দায়িত্বসমুহ কি তা ভালোভাবে জেনে নেওয়ার চেষ্টা করুন; চেষ্টা করুন সেই ইন্ড্রাষ্টি, কোম্পানি আর তাদের বিজনেস অপারেশন সম্পর্কে সম্যাক ধারণা নিতে যা আপনার কনফিডেন্স বাড়াতে সহায়তা করবে।
ইন্টার্ভিউ বোর্ডে আত্নবিশ্বাস সহকারে সাবলীল ভাবে প্রশ্নের উত্তর দিতে নিজেকে প্রস্তুত করা চাই।
আমার ব্যাক্তিগত কর্পোরেট অভিজ্ঞতা আর বিভিন্ন বহুজাতিক ও দেশীয় প্রতিষ্ঠানের কর্মী নিয়োগ প্রক্রিয়ায় নিযুক্ত থাকা গুরুত্বপূর্ণ ব্যাক্তিবর্গের সাথে আলোচনার মাধ্যমে বের করার চেষ্টা করেছি ইন্টার্ভিউ বোর্ডে কোন বিষয়গুলোর উপর প্রতি লক্ষ্য রাখা খুবই জরুরী। সেই সাথে একজন নিয়োগকর্তা আপনার থেকে কখনোই কোন কোন বিষয় সমূহ আশা করেন না সেসবও খুঁজে বের করার চেষ্টা করেছি। আসুন তবে জেনে নেওয়া যাকঃ
১৷ রিজুমিতে উল্লেখিত বিষয় সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করলেও সুন্দরভাবে উত্তর দিন।
২। ইন্টার্ভিউতে কখনো পূর্বের বস সম্পর্কে সরাসরি নিন্দা করবেন না।
৩। বর্তমান জবের দায়িত্বসমূহ কিংবা ছুটি সংক্রান্ত পলিসি নিয়ে অসন্তুষ্টি প্রকাশ করতে যাবেন না।
৪। কর্মরত কোম্পানি কিংবা পূর্বের কোন কোম্পানির কর্ম পরিবেশ নিয়ে ঘৃনার বহিঃপ্রকাশ অনুচিৎ।
৫। আচার আচরনে প্রফেশনালিজম বজায় রাখতে চেষ্টা করুন।
৬। খুব বেশি অসুবিধা না হলে শিডিউল পরিবর্তনের অনুরোধ করতে যাবেন না।
৭। দুঃখিত, আমি লেট কিংবা দুঃখিত, আমাকে এখনই চলে যেতে হবে এমনসব ব্যাপার যেন না ঘটে সে জন্য সতর্ক থাকা।
৮। অনলাইনে ইন্টার্ভিউ ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট টেকনোলজির ব্যবহার ভালো ভাবে জেনে নেওয়া উচিৎ। সেই সাথে নিরবিচ্ছিন্ন ইন্টারনেট সংযোগ থাকা অত্যান্ত জরুরী।
নিয়োগ প্রক্রিয়ায় ইন্টার্ভিউর শেষ পর্যায়ে এসে এইচ.আর. কিংবা বোর্ডের যে কেউ চাকুরী প্রার্থীর কাছে জানতে চান তার কিছু জানার বা জিজ্ঞেস করার আছে কিনা; সেক্ষেত্রে অবশ্যই কোম্পানির ভবিষৎ কর্ম পরিকল্পনা বা অন্য কোন বিষয় নিয়ে প্রশ্ন রাখা উচিৎ যা নিয়োগ কর্তার কাছে চাকুরী প্রার্থীর চাকুরীর প্রতি আগ্রহের কথাই প্রকাশ পাবে।
এছাড়াও ইন্টার্ভিউ বোর্ডে নেগেটিভ মনোভাব কিংবা কোন ধরনের উদ্বীগ্নতা প্রকাশ পায় এম যেকোন আচরণ থেকে বিরত থাকুন। অস্থিরতা পরিহার করে নিজেকে শান্ত রাখতে চেষ্টা করুন আর নিয়োগকর্তার মুখোমুখি হবার পূর্বে শতভাগ শিউর হয়ে নেন যে আপনি সবচেয়ে কমফোর্টেবল এবং প্রফেশনাল পোষাক পরিধাণ করে আছেন এমনকি সেটা অনলাইনের ইন্টার্ভিউ হলেও।
ফ্রেশ গ্র্যাজুয়েটদের ক্ষেত্রে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষার পাশাপাশি প্রয়োজনীয় দক্ষতা যেমন- নেতৃত্বদানের ক্ষমতা, দলগতভাবে কাজ করার দক্ষতা, দ্রুত সমস্যা সমাধানের ক্ষমতা আর যোগাযোগের মতো দক্ষতা সব রকম জব তথা সব কোম্পানিতেই প্রয়োজন পড়ে বলে আমি মনে করি। এর বাইরে প্রযুক্তিগত দক্ষতা, সাবলীল ভাবে নিজেকে উপস্থাপন করতে পারা, ইংরেজী ভাষার উপর ভালো দখল থাকা আপনাকে অন্যদের থেকে এগিয়ে রাখবে। আর অভিজ্ঞদের ক্ষেত্রে নিদিষ্ট ইন্ডাস্ট্রি সম্পর্কে পরিপূর্ণ ধারণা থাকার পাশাপাশি পূর্বের জবের অভিজ্ঞতা আর অর্জন সমূহের উপর গুরুত্বারুপ করে প্রস্তুতি নিলে ইন্টার্ভিউতে ভালো করার সম্ভাবনা থাকবে।
কর্পোরেট জগতের প্রাথমিক চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় আপনি কতটুকু প্রস্তুত?
Follow me on Facebook . Check out my Website .