যে বৈশিষ্ট্য সমূহ চবি কে অন্যান্য ইউনিভার্সিটি থেকে অনন্য করে তুলেছে

ছাত্ররাজনীতিঃ মধ্যবিত্তের একান্ত ভাবনা
July 7, 2018
তরুণ গ্র্যাজুয়েটদের উদ্যোক্তা হতে অনীহা! পেছনের রহস্য কি?
September 2, 2018

প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের লীলাভূমি চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়

জীবনকে যারা ভিন্ন দৃষ্টিতে দেখতে ভালোবাসেন, কাঙ্ক্ষিত বিশ্ববিদ্যালয় জীবনকে শুধুই পাঠ্য বইয়ের মলাটে আর ইট –পাথরে ঘেরা চার দেয়ালের ক্লাস রুমে আবদ্ধ না করে ক্লাসের বাইরের জগৎ থেকেও যারা হাজারো শিক্ষা নিয়ে জীবনকে ভিন্ন আঙ্গিকে, নানান অভিজ্ঞতা আর বৈচিত্রময়তায় ভরিয়ে দিতে চান; চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় হতে পারে তাদের জন্য আদর্শ পাঠ্যস্থান। দেশের নানান প্রান্ত থেকে আগত প্রায় ২৫ হাজার শিক্ষার্থীদের পদচারনায় মুখরিত – প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের লীলাভূমিখ্যাত এই বিদ্যাপীঠ আপনার জীবনে বৈচিত্রের দ্বার খুলে দিতে উন্মুখ হয়ে আছে।

সারিসারি গাছের সমারোহ আপনাকে চবিতে অভ্যর্থনা জানাতে প্রস্তুত। Image Courtesy: মাইনুল ইসলাম শিমুল

১। প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের লীলাভূমিঃ
কবি সত্যিই বলেছেন, আমাদের দেশ পৃথিবীর সৌন্দর্যের রাণী। বিশ্বের দীর্ঘতম সমুদ্র সৈকত, প্রত্নতাত্ত্বিক নির্দশন, ঐতিহাসিক স্থাপনা, বিস্তীর্ণ পাহাড় রাশি, দিগন্ত বিস্তৃত ফসলের মাঠ, পৃথিবী বিখ্যাত ম্যানগ্রোভ সুন্দরবন, অফুরন্ত সবুজের সমারোহ সব মিলিয়ে প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের লীলাভূমি বাংলাদেশ। আর বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস হিসেবে প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের লীলাভূমি হচ্ছে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস।

শহরের কোলাহল আর যান্ত্রিকতা থেকে দূরে অবস্থিত চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস যেন প্রকৃতি আর মানব প্রাণের মিলনস্থল। সবুজ বৃক্ষসারির উপর উড়ন্ত বিচিত্র রঙের হরেক রকম পাখি, প্র বিশ্ববিদ্যালয়ের কাটা পাহাড়, বাণিজ্য অনুষদের পেছনে, ফরেস্ট্রি একালাসহ অন্যান্য সবুজ পাহাড়ের কোলে প্রাকৃতিক পরিবেশে থাকা ছোট আকারের লালচে বাদামী পিঙ্গল রংয়ের মায়া হরিণ, অজগর কিংবা বিচিত্র রকমের দুর্লভ প্রাণীর জীবন্ত জাদুঘর চবি ক্যাম্পাস। ঝুলন্ত সেতু, ঝর্ণাধারা, উদ্ভিদ উদ্যান কিংবা সুবিশাল মাঠ কি নেই চবি ক্যাম্পাসে! পৃথিবীর কোন বিশ্ববিদ্যালয়ে গিরিপথের দেখা পাওয়া যায় কিনা সেই সন্ধান দিতে পারবেন কি? চবিতে এসে দলবেঁধে ভ্রমণ করতে পারেন অপরূপ সৌন্দর্যের চালন্দা গিরিপথ যা আপনাকে এডভ্যাঞ্জারের পাশাপাশি অতিমাত্রায় বিমোহিত করবে।

অপরূপ সৌন্দর্যের চালন্দা গিরিপথ,চবি। Image Courtesy: মাইনুল ইসলাম শিমুল

প্রকৃতি প্রেমীরা এখানে নিজেকে খুঁজে পাবেন সবুজের পাতায় পাতায়, দূর পাহাড়ে শেন দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকার মাঝে কিংবা শীতের সকালের শিশির বিন্দুতে, প্রকৃতির নির্জনতায় আর রাতের নিস্তব্ধতায়।

আর যারা চট্টগ্রামের বাইরে থেকে আসবেন তারা খুব সহজেই বিশ্ববিদ্যালয় জীবনের ফাঁকে ফাঁকে চাইলে দেখে নিতে পারেন কক্সবাজার, বান্দরবান, রাঙ্গামাটি আর খাগড়াছড়ির বৈচিত্রময় প্রকৃতি আর পাহাড়ি জনপদের জীবনযাত্রা। ক্লাসের বাইরের এই ভ্রমণ অভিজ্ঞতা আপনাকে নির্মল বিনোদনের পাশাপাশি আত্ববিশ্বাস আর কর্মতৎপরতা বাড়াতেও সহায়তা করবে।

প্রাকৃতিক ঝর্ণাধারা, উদ্ভিদ উদ্যান আর মায়া হরিণের দেখা পাবেন চবিতে। Image Courtesy: মাইনুল ইসলাম শিমুল

২। বিশ্বের একমাত্র শাটল ভিত্তিক বিশ্ববিদ্যালয়ঃ
চবি একমাত্র বিশ্ববিদ্যালয় যেখানে এখনো শাটল ট্রেন এখনো চলাচল করে। আর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণ বলা হয় এই শাটল ট্রেনকে। এই শাটলেই প্রতিদিন হাজারো প্রাণের মেলা বসে। গল্প আড্ডা আর গানে মুখরিত হয়ে উঠে এই শাটল ট্রেন। এই ট্রেনের বগিতে গান করে অনেকেই হয়েছে বিখ্যাত গায়ক। তাই চবিকে গানবাজদের তীর্থস্থানও বলা হয়ে থাকে। বিশ্ববিদ্যলয়ের অধ্যয়ন শেষে এখানকার শিক্ষার্থীরা সবচেয়ে বেশী যা মিস করে তা হলো এই শাটলের আড্ডা আর গান।

৩। অসাধারণ ফ্যাকাল্টিঃ
বিশিষ্ট পদার্থবিজ্ঞানী, গণিতবিদ, জ্যোতির্বিজ্ঞানী, বিশ্বতত্ত্ববিদ সর্বজন শ্রদ্ধেয় ডঃ জামাল নজরুল ইসলাম স্যার , নোবেল বিজয়ী ডঃ মুহাম্মদ ইউনূস স্যার , বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনের চেয়ারম্যান প্রফেসর আব্দুল মান্নান স্যারের মত বিখ্যাত ব্যক্তিত্বরা শিক্ষকতা করেছেন চবিতে। পুরাতন ধ্যান- ধারণা ভেঙ্গে গুরু শিষ্য সম্পর্কের গন্ডি পেরিয়ে চবির শিক্ষক, শিক্ষার্থীর মধ্যে বন্ধুত্বপূর্ণ ও সম্মানজনক সম্পর্ক যেন জীবনের অন্য রকম অভিজ্ঞতা হিসেবে ধরা দেয়। এখানে রয়েছে M.Phil., PhD, M.D., M.P.H এর মতো উচ্চতর ডিগ্রী গ্রহনের সুযোগও।

দৃষ্টি নন্দন আই টি ফ্যাকাল্টি, চবি।

৪। প্রয়াত মেয়র আনিসুল হকের মতো বরেণ্য ব্যাক্তিদের ক্যাম্পাসঃ
এই বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসেই অধ্যয়ন করেছেন প্রয়াত মেয়র আনিসুল হক, সাবেক প্রধান বিচারপ্রতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহা, বাংলাদেশ ব্যাংকের ১১ তম গভর্নর ফজলে কবির, পুলিশের সাবেক আইজি প্রয়াত আনোয়ারুল ইকবাল সহ বহু বরেণ্য আর গুণীজন।

বিশেষ দিনে দেখা মেলে সম্মানীত এলাইম্নিদের।

৫। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় জাদুঘরঃ
১৯৭৩ সালের ১৪ই জুনে প্রতিষ্ঠিত বাংলাদেশের একমাত্র অ্যাকাডেমিক জাদুঘর যা মূলত মানব ইতিহাস, শিল্প এবং সংস্কৃতি বিষয়ে শিক্ষা ও গবেষণা কার্যক্রমে শিক্ষার্থী ও গবেষকদের সহায়তা প্রদান, প্রত্নতত্ত্ব, ইতিহাস ও প্রাচীন শিল্পকলার নিদর্শন সংগ্রহ, সংরক্ষণ, প্রদর্শন এবং এ সকল বিষয়ে মৌলিক গবেষণার সু্যোগ সৃষ্টির লক্ষ্যে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্রন্থাগার ভবনের পশ্চিম পাশে অবস্থিত। এটি চট্টগ্রামের একমাত্র শিল্প জাদুঘর এবং দেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় সমূহের মধ্যেও একমাত্র জাদুঘর হিসেবে বিবেচিত। এছাড়াও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের পাঠক্রমের সমর্থনে রয়েছে ‘প্রাণীবিদ্যা জাদুঘর’,আবার বিশ্ববিদ্যালয়েরই সামুদ্রিক বিজ্ঞান ইন্সটিটিউটে গড়ে তোলা হয়েছে ‘সমুদ্র সম্পদ যাদুঘর’ যেখানে ৫৫০টির মতো সামুদ্রিক প্রাণী সংরক্ষণ করা হয়েছে।

বাংলাদেশের একমাত্র অ্যাকাডেমিক জাদুঘর, চবি। Image Courtesy: মাইনুল ইসলাম শিমুল

৬। ৪০ হাজার জার্নাল সমৃদ্ধ চবি গ্রন্থাগারঃ
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগার চট্টগ্রামের সর্ববৃহৎ গ্রন্থাগার যা দেশের সবচেয়ে সমৃদ্ধ গ্রন্থাগারগুলোর মধ্যে অন্যতম। এই গ্রন্থাগারে বর্তমান সংগ্রহ সংখ্যা প্রায় ৩.৫ লক্ষ যার মধ্যে রয়েছে বিরল বই, জার্নাল, অডিও-ভিজ্যুয়াল উপাদান, পান্ডুলিপি এবং অন্ধদের জন্য ব্রেইল বই। গ্রন্থাগারটিকে বর্তমানে অটোমেশনের আওতায় আনা হয়েছে।

দেশের সবচেয়ে সমৃদ্ধ গ্রন্থাগারগুলোর মধ্যে অন্যতম। Image Courtesy: মাইনুল ইসলাম শিমুল

৭। চবির স্মৃতিস্তম্ভ ও ভাস্কর্যঃ
বাংলাদেশ সৃষ্টির ইতিহাসের সাথে চবির নিবিড় যোগাযোগ রয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রবেশ পথেই রয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের মুক্তিযোদ্ধারদের আত্মত্যাগ আর বীরত্বের স্মৃতিস্বরূপ নির্মিত ‘স্মরণ স্মৃতিস্তম্ভ’ যাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের সাতজন মুক্তিযোদ্ধার নাম ও ছবি রয়েছে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবসায় অনুষদের সামনে বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে নিহত বুদ্ধিজীবীদের স্মরণে নির্মিত হয়েছে “বুদ্ধিজীবী স্মৃতিস্তম্ভ’। স্তম্ভটির অবস্থান বুদ্ধিজীবী চত্বর নামে পরিচিত। বুদ্ধিজীবী স্মৃতিস্তম্ভের বিপরীত পাশে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার অবস্থিত এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের কলা অনুষদের সামনে রয়েছে নবনির্মিত ‘স্বাধীনতা স্মৃতি ম্যুরাল’, ভাস্কর্যটিতে ৪টি পাখির প্রতীকী নির্মাণে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে বাঙালির ছয় দফা ও স্বাধীনতা আন্দোলনের ক্রমধারা এবং পাখির ডানায় ২১টি পাথরের টুকরায় লিপিবদ্ধ হয়েছে বায়ান্নর ভাষা আন্দোলনের স্মৃতি।

নবনির্মিত ‘স্বাধীনতা স্মৃতি ম্যুরাল’চবি। Image Courtesy: মাইনুল ইসলাম শিমুল

৮ । চবির হলসমূহ – যেন প্রকৃতির সাথে বসবাসঃ
পাহাড় ঘেরা প্রকৃতির কোলে চবি ক্যাম্পাসে রয়েছে ১২টি আবাসিক হল যার মধ্যে ৭টি ছাত্র হল ও ৩টি ছাত্রী হল এবং ২টি নির্মানাধীন ছাত্র ও ছাত্রী হল। এছাড়াও বিশ্ববিদ্যালয়ে ১টি দৃষ্টিনন্দন হোস্টেলও রয়েছে। প্রতিটি হলের নির্মাণশৈলী যেমনি আলাদা তেমনি হল গুলো কোনটা পাহাড়ের কুল ঘেষে আবার কোনটা পাহাড় আর নয়নাভিরাম সবুজের ঘেরা যেন এক স্বপ্নপূরী। রাতের নিস্তব্ধতা ভেঙ্গে দূর পাহাড়ে পাখির কলতান, জোনাকির মৃদু আলো আর ঝিঁঝিঁ পোকার ডাক পুরো ক্যাম্পাসকে করে তুলে আরো আকর্ষণীয়।

সবুজের ঘেরা হল নামের স্বপ্নপূরী, চবি। Image Courtesy: মাইনুল ইসলাম শিমুল

৯ । উৎসবের ক্যাম্পাসঃ
চবি এখন আর মামা–চাচাদের সময়কার উৎসবহীন পুরোনো ক্যাম্পাস নয়। সকল হীনতা আর শীর্ণতাকে পেছনে ফেলে চবি এখন এগিয়ে চলছে দূর্বার গতিতে তার আপন সাফল্যের পানে। বাঙ্গালীর বৈশাখী উৎসব থেকে শুরু করে, পহেলা ফাল্গুনেও নতুন সাঁঝে ধরা দেয় চবি ক্যাম্পাস। বিভিন্ন জাতীয় দিবস উপলক্ষ্যে প্রোগ্রাম, বই মেলা আর সারা বছর ব্যাপী বিভিন্ন কালচারাল সংগঠনের উদ্যোগে আয়োজিত নানান প্রোগ্রাম চলতেই থাকে।

র‍্যালী – বৈশাখী উৎসব, চবি। Image Courtesy: মাইনুল ইসলাম শিমুল

এছাড়া চবির বিভিন্ন বিভাগের আয়োজনে আয়োজিত ‘নবীন বরণ ও র‍্যাগ ডে’ গুলোকে দেশ সেরা স্বীকৃতি দেয়া যায় অনায়াসেই। কালার ফেস্টুন আর মুখোশ সম্বলিত বিশাল র‍্যালী আর ফ্ল্যাশ ফব আর আতশবাজি এখানকার র‍্যাগ ডের প্রধান আকর্ষণ। এছাড়া এখানে নিয়মিত সমাবর্তনের আয়োজন হয়, আয়োজন হয় বিভিন্ন বিভাগের বর্ষ পূর্তি, যুগ পূর্তি, ২৫ বছর পূর্তিতে সিলভার জুবিলী সহ নানান রঙ্গীন অনুষ্ঠানের। আর দেশ সেরা শিল্পীদের নিয়ে কনসার্ট আয়োজন চবিতে নিয়মিত ঘটনায় বলা যায়।

নবীনদের বরণ ও বিদায়ী শিক্ষার্থীদের বিদায় জানাতে হরমামেশাই জমকালো অনুষ্ঠানের আয়োজন হয় চবিতে। চবিতে মার্কেটিং বিভাগের এমনই এক র‍্যালীতে শিক্ষার্থীদের সাথে শ্রদ্ধেয় শিক্ষকদবৃন্দ। Image Courtesy: আবির’স ফটোগ্রাফি

১০। সর্বত্র হাজারো প্রাণের স্পন্দন মুখরিত ক্যাম্পাস আর মউর দোয়ানঃ
এখানে ভর্তি হওয়ার পর ক্যাম্পাস থেকে ২২ কিঃ মিঃ দূরে শহরে অবস্থান করেই হাজারো তারুণ্যের স্পন্দন অনুভব করা শুরু করবেন। শাটল ট্রেন বা রেল স্টেশন থেকে কাটা পাহাড়, সমাজ বিজ্ঞান থেকে বুদ্ধিজীবী চত্ত্বর , শামসুন্নাহার থেকে বোটানিক্যাল গার্ডেন , ফরেস্টি থেকে হেলিপ্যাড কিংবা কলা অনুষদের ঝুপড়ী থেকে বিজ্ঞান অনুষদ সর্বত্র সর্বদা প্রাণের চাঞ্চল্য বিরাজ করে।

এখন চবিতে বিভিন্ন বিভাগের অনুষ্ঠানে এমন রঙ্গিন চিত্র আর প্রাণ চাঞ্চলল্যের দেখা পাবেন। Image Courtesy: আবির’স ফটোগ্রাফি

শাটল থেকে নেমে রেল স্টেশন পেরিয়ে চবির ক্যাম্পাসে প্রবেশের পূর্বে হাতের ডান পার্শেই অবস্থিত বিশ্ববিদ্যালয়ের সব চেয়ে পরিচিত ‘মউর দোয়ান’ যেখানে আড্ডার ফাঁকে চট্টগ্রামের ঐতিহ্যবাহী চনা কিংবা চা’য়ে চুবিয়ে গরম পরোটা খাওয়ার দৃশ্য আপনাকে অন্যরকম আবেশ এনে দেবে। বাংলাদেশে আর কোন ক্যাম্পাসে এই চা –পরোটা চুবিয়ে খাওয়ার ইউনিক দৃশ্য আর নাও দেখতে পারেন!

বিশ্ববিদ্যালয়ে ঝুলন্ত সেতুও শুধুমাত্র চবিতেই পাবেন। Image Courtesy: মাইনুল ইসলাম শিমুল

১১। ক্যারিয়ার সহায়ক প্রোগ্রামঃ
একসময় এসব হয়তো কারো চিন্তাতেও আসতো না ক্যারিয়ার সহায়ক কিংবা বিভিন্ন প্রতিযোগিতামূলক প্রোগ্রাম আয়োজনের কিংবা চিন্তাকে বাস্তবে রুপ দিতে খুব একটা দেখা যেত না কিন্ত এখন হরহামেশাই ক্যারিয়ার সহায়ক প্রোগ্রাম, জব ফেয়ার আর ক্যাম্পাস রিক্রুটমেন্ট প্রায়ই হচ্ছে চবিতে। এখন চবি শিক্ষার্থীরা দেশে এবং দেশের বাইরে বিভিন্ন প্রতিযোগিতামূলক কার্যক্রমে অংশ নিয়ে বিজয় মাল্য ছিনিয়ে নিয়ে আসছে।

সত্যি বলতে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় সমূহে দেশের প্রায় সব জেলা থেকে বৈচিত্র্যময় হাজারো শিক্ষার্থীরা এসে প্রাণের মেলা বসায়; সংস্কৃতির আদান-প্রদান হয়; চবিও এর ব্যাতিক্রম নয়। বিশ্ববিদ্যালয় জীবনের এই প্রাণের মেলাতে ঘুরে নিজেকে জানার পাশাপাশি বিশ্বের নানা জ্ঞান-বিজ্ঞান আর শিল্প-সাহিত্য সম্পর্কে খোঁজ নেয়ার অফুরান সুযোগ যেন হাতছাড়া না হয় সেদিকে লক্ষ্য রাখা উচিৎ।

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ডিবেটিং সোসাইটির উদ্যোগে আয়োজিত ওয়ার্কশপে কথা বলছেন চবির আইনের জনপ্রিয় শিক্ষক শ্রদ্ধেয় সাঈদ আহসান খালিদ স্যার।

এসবের পাশাপাশি নিকট ভবিষতের জীবন –জীবিকার প্রয়োজনে – দরকারি নেতৃত্ব গুণ আর সাংগঠনিক দক্ষতা রপ্ত করতে কিংবা নিজেকে মেলে ধরতে এখন প্রায় সব পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়েই ক্যারিয়ার ক্লাব, বিজনেজ ক্লাব, ডিবেটিং ক্লাব, টুরিস্ট ক্লাব, ব্লাড ডোনেট, আবৃত্তি, বন্ধুসভা ও সামাজিক–সাংস্কৃতিক সংগঠন সহ নানান কো-কারিকুলাম কার্যক্রমে যুক্ত হবার সুযোগ আছে যা আপনি চবিতেও পাবেন। তবে অন্যসব পাবলিক বিশ্ববদ্যালয়ের মতো এখানেও বিভিন্ন বিভাগে সেশনজট, অস্থির ছাত্ররাজনীতির মতো সমস্যা থাকার পরেও এখানকার হাজার হাজার শিক্ষার্থী চবিকে নিয়ে গর্ব করে, ভালোবাসে তাদের প্রিয় বিদ্যাপীঠকে।

চবির আবৃত্তি মঞ্চের আয়োজনে একক আবৃত্তি প্রতিযোগিতায় বিজয়ীদের সাথে বিশ্ববিদ্যালয়ের মাননীয় উপাচার্য ড. ইফতেখার উদ্দিন চৌধুরী। Image Courtesy: রিয়াজুল কবির

এতোসব কিছুকে বিবেচনায় রেখে আগ্রহীরা চাইলে তাদের পছন্দের তালিকার উপরের দিকে প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের লীলাভূমিখ্যাত এই বিদ্যাপীঠকে অনায়াসেই রাখতে পারেন ! আর ভ্রমণপ্রেমীরাও সময় পেলে চবি ক্যাম্পাসের প্রকৃতির সান্নিধ্যে কিছুটা সময় কাটাতে ভুলবেননা যেন কারণ চবির নয়নাভিরাম প্রাকৃতিক সৌন্দর্য সব সময় আপনাকে হাতছানি দিয়ে ডাক দিয়ে যাচ্ছে।

অনুপ্রেরণায়ঃ শ্রদ্ধেয় প্রফেসর ড. মোহাম্মদ শামসুদ্দোহা স্যার, মার্কেটিং বিভাগ,চবি।
এবং শুভাকাঙ্ক্ষী ওমর মোহাম্মদ ফারুক, কনসালটেন্ট,বিট বাইট টেকনোলোজি।

পড়ুন- স্বপ্নবাজ তারুণ্যের আমন্ত্রণে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে  

জেনে নিন কর্পোরেট জগতের প্রাথমিক চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় আপনি কতটুকু প্রস্তুত?

Follow me on Facebook . Check out my Website .

Hossain Joy
Hossain Joy
Hossain Joy is a seasoned professional in the corporate world, bringing a wealth of experience and insights to the table. With a successful career spanning 12 years, he has navigated the intricacies of the corporate landscape with resilience and determination. Hossain Joy is not only an accomplished writer but also a mentor who is passionate about sharing the valuable lessons learned throughout his journey. He has authored the inspiring book "Journey to My First Corporate Job," offering a compelling narrative of his early career experiences, challenges, and triumphs. In addition to his book, Hossain Joy extends his reach through a thought-provoking blog, where he imparts practical advice and wisdom gained from years of corporate life. He aims to guide and inspire young professionals, providing them with the tools to navigate their own paths to success. Whether through the written word or personal mentorship, Hossain Joy remains dedicated to empowering the next generation of professionals, fostering a community of growth, resilience, and achievement. Connect with Hossain Joy on Facebook.com/Hossain.Joy for more insights and updates on his journey and upcoming projects.

1 Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *