আমাদের দেশ সেরা তামিম ইকবালের কথায়-ই ধরুন না, ব্যাটিং ছেড়ে দিয়ে তামিম যদি বোলিংয়ের উপর পুরোপুরি ফোকাস করেন তবে কি তিনি দেশ সেরা ওপেনিং বোলারে পরিণত হতে পারবেন? নিশ্চিত ভাবেই আপনি মাথা নেড়ে না-বোধক জবাব দেবেন। হয়তোবা এও বলবেন যে, উনার শক্তির জায়গা হচ্ছে ব্যাটিং, সুতরাং তামিমের ব্যাটিংয়েই অধিক ফোকাস করা উচিৎ। আর প্রকৃত সত্য এটাই যে, ব্যাটিং-ই তামিমকে বিশ্বজোড়া খ্যাতি এনে দিয়েছে।
ঠিক তেমনি ভাবে আমাদের সবারই নিজ নিজ শক্তির জায়গা আছে যেখানে অধিক ফোকাস জরুরী। কিন্ত দুর্ভাগ্যজনক ভাবে আমরা সেটা না করে বরং নিজেদের দুর্বল দিক নিয়ে কাজ করতে থাকি অর্থাৎ উইকনেস খুঁজে বের করে সেটার উপর অধিক ফোকাস করে ফেলি। আর তাতে করে নিজের অজান্তেই নিজের অধিক পারদর্শিতার জায়গাটা থেকে ফোকাস সরিয়ে সেটাকে গড় পড়তায় নিয়ে আসি। অথচ আপনার আমার সামনে সু্যোগ ছিলো নিজের শক্তিমত্তার উপর অধিক ফোকাস করে নিজেকে অন্যের থেকে আলদাভাবে তুলে ধরার।
গ্রো করার জন্য নিজের শক্তিমত্তার উপর ফোকাস করার বিকল্প নেই
আবার ধরুন, স্কুল ও কলেজ লাইফে সব সময় আপনি ইংরেজীতে অধিকতর দুর্বল ছিলেন। কোন রকম টেনেটুনে পাশ মার্ক নিয়ে এইসএসসি পর্যন্ত এসেছেন। ইংরেজি ভীতি এখনো আপনাকে তাড়া করে বেড়ায়। অপরদিকে হিসাব বিজ্ঞানে আপনার পারদর্শিতা অসাধারণ রকমের। সব সময় A+ পেয়ে পেয়ে এসেছেন। তো বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে এসে আপনি কোন বিষয়ের উপর উচ্চতর ডিগ্রী নিতে আগ্রহী হবেন? – ভয়ানক ভাবে ভীত কটমটে ইংরেজি নিয়ে নাকি আপনার কাছে পানির মত সহজ-সরল হিসাব বিজ্ঞান বিষয়ে? নিশ্চয় আপনি উত্তর পেয়ে গেছেন।
তো আমাদের জীবনের অন্যন্য ক্ষেত্রেও একইরকম সূত্র প্রযোজ্য। তারপরও আমরা নিজেদের দুর্বল দিক নিয়ে বেশী চিন্তিত হয়ে নিজেদের শক্তির জায়গাগুলোকে ফুটিয়ে তুলতে প্রায়শই ব্যর্থ হই।
আবার কোন কাজে ব্যর্থ হলে মূল কারণ সমূহ অনুসন্ধান না করে বরং নানান অজুহাত খুঁজতে থাকি। অন্য কোন ব্যাক্তি বা প্রতিষ্ঠান, পরিবেশ-পরিস্থিতি কিংবা অবস্থাকে দায়ী করে অযথা নিজেদের সময় ও এনার্জি নষ্ট করে থাকি। এতে করে অনেকের সাথে স্বাভাবিক সম্পর্ক পর্যন্ত নষ্ট করে ফেলতেও দ্বিধা করিনা। প্রকৃতপক্ষে আপনার না পাওয়া আর ব্যর্থতা সমূহের জন্যে আপনি নিজেই দায়ী।
অন্যদিকে আপনি যদি একটু সময় নিয়ে চিন্তা করেন যে, অতীতে পাওয়া সাফল্যের পেছনের কারণ সমূহ কি ছিলো অর্থাৎ আপনি যদি আপনার ফোকাসটা ব্যর্থতা/দুর্বলতা থেকে সামান্য সরিয়ে সাফল্য/শক্তিমত্তার দিকে চোখ রাখেন তবে সহজেই আপনি আত্নবিশ্বাস ফিরে পেতে থাকবেন এবং খুব অল্প সময়ের মধ্যেই নিজেকে পজিটিভ পরিমন্ডলে আবিষ্কার করবেন। যা আপনাকে লক্ষ্যে পৌঁছাতে বেশ ভালোভাবেই অনুপ্রাণিত করবে বলে আমার বিশ্বাস।
এবার আপনার কাছে একটি প্রশ্ন রাখি। আপনার কি মনে হয়না যে, সাফল্যের চূড়ায় পৌঁছানো সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট বিল ক্লিল্টন, বারাক ওবামা, স্টিভ জব কিংবা হাল আমলের বিল গেট প্রত্যাকেরই কোন না কোন দুর্বল দিক ছিলো? সব বিষয়ে নিশ্চয় করে তারা সমান পারদর্শী নন। কিন্ত পার্থক্য হচ্ছে উনারা নিজেদের শক্তিমত্তার উপর ফোকাস করেছেন, উইকনেসের উপরে নয়!
আসলে কোন বিষয়ে সাফল্য পেলে তাঁর মূল কারণ কি ছিলো, অন্যদের থেকে ব্যতিক্রমধর্মী কোন উপাদান ছিলো কিনা; সেসব খুঁজে বের করতে পারলে পরের প্রজেক্টে সাফল্য লাভ সহজতর হয়। আর তাই যে কোন কাজ শুরুর পূর্বে পূর্বেকার কোন কাজের সাফল্যের উপাদান সমুহের কথা চিন্তা করুন; যথাযথ প্রস্তুতি নিন, সঠিক পরিকল্পনা প্রণয়ন করুন, রিসোর্স এর উত্তম ব্যবহার নিশ্চিত করার মাধ্যমে ব্যর্থতার বৃত্ত থেকে সাফল্যের পানে এগিয়ে চলুন।
শেষ করবো একটি ইংরেজি প্রবাদ বাক্য দিয়ে ‘So many people can be responsible for your success, but only you are responsible for your failure’. তো ভেবে দেখেন, সাফল্যের পথে হাটবেন নাকি ব্যর্থতার বৃত্তে নিজেকে আবদ্ধ রাখবেন; সিদ্ধান্ত আপনার!
পড়ে নিনঃ গৃহবন্দী…? নাকি নিজেকে বদলে ফেলার সুযোগ?
Please go for videos youtube
Follow me on Facebook
Check out my Website
2 Comments
Thank you Sir,
welcome