হার্ভার্ড বিজনেস রিভিউর এক প্রবন্ধে দেখা গেছে যে, তরুণ নেতৃত্ব কর্মক্ষেত্রে তার কলিগদের কাছে গ্রহণযোগ্যতার দিকে থেকে বেশ কিছু ইউনিক চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হচ্ছেন। সাফল্য লাভের জন্য প্রয়োজনীয় দক্ষতা আর অভিজ্ঞতার অভাবকেই তরুণ নেতৃত্বের প্রাথমিক চ্যালেঞ্জ হিসেবে ধরে নেয়া হচ্ছে। আর এই মনোভাব থেকে টিমের অন্য সকল সদস্যদেরকে বের করে নিয়ে আসতে চাই সবার জন্য একটি মানানসই লক্ষ্য স্থির করা তথা টিমের অন্য সবার সাথে সেই লক্ষ্য শেয়ার করে সামনের দিকে এগিয়ে যাওয়া। এক্ষেত্রে টিমের সবাই টিম লিডারকে নিশ্চিত করবেন যে তারা পরিকল্পিত লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে একমত এবং সেটা পূরণের জন্য নিরন্তর প্রচেষ্টা চালিয়ে যাবেন। তরুণ লিডারও তার উপর অর্পিত দায়িত্ব সমূহ বিশদভাবে ব্যাখ্যা করবেন যাতে করে তার টিম আশানুরূপ পারফর্ম করতে পারে। এতক্ষণে নিশ্চয় করে বুঝে গেছেন আজকের আয়োজন আসলে টিম পরিচালনা নিয়ে। আসুন তবে জেনে নেওয়া যাক কিভাবে টিম লিড দিয়ে সামনের দিকে এগিয়ে যাবেন।
এক
সত্যিকার অর্থে টিমের ভালো চাইতে হবে, এর কোন বিকল্প নেই!!! যদি আপনার টিমকে এই অনুভূতি দেন যে আপনি তাদের জন্য যথেষ্ট কেয়ারিং এবং তাদের মঙ্গলের জন্য কাজ করছেন তাহলে খুব সহজেই তারা আপনাকে সম্মান দিতে শুরু করবে। আবার কারো কেয়ার নেয়ার নেয়া মানে এই নয় যে তাকে সব সময় ইনফ্লুয়েন্স করতে হবে কিংবা টিম মেম্বারদের সব ব্যাক্তিগত অনুরোধ মেনে নিতে হবে। অধিকন্তু আপনি এটা দেখান যে–পুরো টিম তথা টিমের প্রত্যেকের সাফল্যের ব্যাপারে আপনি যথেষ্ট সচেষ্ট আছেন। এবং এটাও আপনাকে নিশ্চিত করতে হবে যে কাজের ক্ষেত্রে টিম মেম্বারদের প্রয়োজনীয় সময় ও সাপোর্ট দেন। মনে রাখা দরকার যে শুরুতে আপনি যতটুকু বলবেন, টিমের সদস্যদের কথা তারচেয়ে বেশী সময় নিয়ে শুনবেন।
দল পরিচালনায় টিম ওয়ার্কে গুরুত্ব দিন, সহজেই সাফল্য ধরা দেবে।
দুই
টিমের সাফল্য মানেই আপনার সাফল্য, এটা মানতেই হবে!!! যে কোন বিজনেস লিডারের সাফল্য বিচার করার প্রধান মাপকাঠি হলো তার টিমের সাফল্য কতটুকু সেটা বিবেচনায় নেয়া। সর্বদা টিমকে হাইলাইটস করে প্রত্যেক কাজ সুচারু রুপে সম্পাদনের চেষ্টা করে যেতে হবে। আর টিমকে সাফল্যের কৃতিত্ব দেয়াটা হচ্ছে একজন ইয়ং লিডারের শ্রদ্ধা অর্জনের সবচেয়ে কার্যকরী উপায়। আর যখন লোকজন ফিল করবে যে আপনি তাদের প্রফেশনাল উন্নতির জন্য কাজ করেন, তখন তারা নিজে থেকে আরো ওপেন হবে, নিজেদের ব্যাপারে ফিডব্যাক চাইবে; আর গাইডলাইন প্রত্যাশা করবে।
তিন
কাজের ক্ষেত্রে দলের সদস্যদের প্রয়োজনীয় স্বাধীনতা দিন, এ ব্যাপারে কোন কৃপণতা নয়!!! শুরুতেই আপনি যদি খুঁটিনাটি সব বিষয়ে নিজের নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্টা করতে যান, তবে টিমের লোকজন খুব তাড়াতাড়ি আপনাকে নিয়ে হতাশ হয়ে পড়তে পারে। এটা আরো বেশী করে চাপ সৃষ্টি করবে যদি কারো পূর্বের ম্যানেজারের সাথেও এমন অভিজ্ঞতা থেকে থাকে।
এর চেয়ে বরং একটি নিদিষ্ট লেভেল পর্যন্ত টিম মেম্বারদের কাজের স্বাধীনতা দিন, তাদের উপর আস্থা রাখুন এবং তাদেরকেও সঠিক সিদ্ধান্ত নেওয়ার সুযোগ করে দিন। কিছুদিন পর সম্ভব হলে তাদের কাজের মূল্যায়ন করুন এবং দেখুন কে স্বাধীনভাবে কাজ করছে আর কে করছে না। তখন যদি কেউ পারফর্ম করতে ব্যর্থ হয় তবে তাকে পারফর্মেন্স উন্নতির পরিকল্পনা দিন, সময় দিন, তাকে নিয়মিত মনিটর করুন। এরপরও যদি কারো পারফর্মেন্সের উন্নতি না হয় এবং তিনি উন্নতি করতে না চান তবে তাকে চলে যেতে দিতেই পারেন। মনে রাখবেন, একজন ম্যানেজার কখনো তার টিমের খুঁটিনাটি সবকিছুর নিয়ন্ত্রক নন বরং তিনি হলেন ফ্যাসিলেটেটর যিনি অন্যদেরকে ক্ষমতায়ন করেন।
ইয়ং লিডার হিসেবে লার্নিংয়ে ক্ষুধার্ত থাকুন, প্রতিদিনই অল্প অল্প করে শিখতে থাকুন আর নিজেকে সামনে এগিয়ে নিন।
ফাইনালিঃ
আমার ব্যাক্তিগত অভিমত হচ্ছে- এটা খুবই স্বাভাবিক যে আপনার কাছে সব সময় সব ধরনের প্রশ্নের জবাব কিংবা সকল সমস্যার সমাধান জানা নাও থাকতে পারে। তাই আপনার উচিৎ হবে অন্যান্য অভিজ্ঞ লিডারদের সাথে একটি কার্যকরী কর্পোরেট নেটওয়ার্ক গড়ে তোলা যাতে করে চ্যালেঞ্জিং ম্যানেজেরিয়াল কাজের প্রয়োজনে আপনি তাদের মূল্যবান পরামর্শ নিতে পারেন। সাকসেসফুল বিজনেজ লিডারদের সাথে সম্পর্ক উন্নয়ন আপনার লার্নিং কার্ভের গতিকে দ্রুত ত্বরান্বিত করে আপনাকে আরো কার্যকর টিম লিডার হিসেবে পরিণত করবে।
তরুণ কর্পোরেট লিডারদের জন্যে অজস্র শুভকামনা!
কর্পোরেট নেতৃত্ব , একাল বনাম সেকাল
Follow me on Facebook . Check out my Website .
3 Comments
[…] এক্ষেত্রে বাস্তবতা এবং সীমাবদ্ধতার কথা মাথায় রেখে শিক্ষার্থীদের উচিৎ বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নের সময়ে কাঙ্খিত জবের জন্যে প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি নেয়া, দরকারি সব দক্ষতাসমূহ যেমনঃ সুন্দর উপস্থাপনা, যোগাযোগ দক্ষতা, সমস্যা সমাধানে পটু হওয়া, চ্যালেঞ্জ নেওয়ার মানসিকতা, ইংরেজি ভাষার উপর দখল, এম এস ওয়ার্ড, এক্সেল, ই-মেইল করতে পারা ইত্যাদি অর্জনে মনোনিবেশ করা; যাতে করে অন্তত পড়াশোনা শেষ করার পর অন্যন্য প্রতিযোগির চেয়ে এগিয়ে থেকে ছয় মাসের মধ্যে চাকুরি নিশ্চিত করা যায়। কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে জব প্রস্তুতির ব্যাপারটি অনেক শিক্ষার্থীর কাছে অজানা। পড়ুন কর্মক্ষেত্রে তরূণেরা কিভাবে নেতৃত্ব … […]
[…] […]
[…] এক্ষেত্রে বাস্তবতা এবং সীমাবদ্ধতার কথা মাথায় রেখে শিক্ষার্থীদের উচিৎ বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নের সময়ে কাঙ্খিত জবের জন্যে প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি নেয়া, দরকারি সব দক্ষতাসমূহ যেমনঃ সুন্দর উপস্থাপনা, যোগাযোগ দক্ষতা, সমস্যা সমাধানে পটু হওয়া, চ্যালেঞ্জ নেওয়ার মানসিকতা, ইংরেজি ভাষার উপর দখল, এম এস ওয়ার্ড, এক্সেল, ই-মেইল করতে পারা ইত্যাদি অর্জনে মনোনিবেশ করা; যাতে করে অন্তত পড়াশোনা শেষ করার পর অন্যন্য প্রতিযোগির চেয়ে এগিয়ে থেকে ছয় মাসের মধ্যে চাকুরি নিশ্চিত করা যায়। কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে জব প্রস্তুতির ব্যাপারটি অনেক শিক্ষার্থীর কাছে অজানা। পড়ুন কর্মক্ষেত্রে তরূণেরা কিভাবে নেতৃত্ব … […]