নিয়োগকর্তা আপনার থেকে যা কখনোই আশা করেন না!

রোডম্যাপ টু সেলস প্রফেশন
April 14, 2019
ইন্টার্নশীপ, কোথায় করবেন?
August 15, 2019

চাকুরী নামক সোনার হরিণের কিংবা ক্যারিয়ারের বেটার কোন সুযোগের দেখা পেতে গেলে আপনাকে অবশ্যই একটি নিদিষ্ট নিয়োগ প্রক্রিয়ার মুখোমুখি হতেই হবে, যেখানে আপনি নিজেকে আর নিজের অর্জিত শিক্ষা আর দক্ষতাকে প্রেজেন্ট করবেন। তাই যে কোন কোম্পানির নিয়োগ প্রক্রিয়ায় অংশ গ্রহণের প্র্যাক্কালে আপনার উচিৎ পুরো নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পর্কে ধারণা নেয়া যা আপনাকে অন্যসব প্রতিযোগী থেকে এগিয়ে রাখবে।

প্রতিষ্ঠান ভেদে নিয়োগ প্রক্রিয়ায় ভিন্নতা থাকলেও প্রায় সব জায়গাতেই চাকুরী প্রার্থীদের এক বা ততোধিক ইন্টার্ভিউর মুখোমুখি হতেই হয়। এক্ষেত্রে সবারই উচিৎ ইন্টার্ভিউকে খুব গুরুত্বের সাথে নেয়া। আর যে কোন ইন্টার্ভিউ বোর্ডের মুখোমুখি হবার পূর্বে চাই যথাযথ প্রস্তুতি। যে পদের জন্য ইন্টার্ভিউ দিতে যাচ্ছেন, সেই পদের দায়িত্বসমুহ কি তা ভালোভাবে জেনে নেওয়ার চেষ্টা করুন; চেষ্টা করুন সেই ইন্ড্রাষ্টি, কোম্পানি আর তাদের বিজনেস অপারেশন সম্পর্কে সম্যাক ধারণা নিতে যা আপনার কনফিডেন্স বাড়াতে সহায়তা করবে।

আমার ব্যাক্তিগত কর্পোরেট অভিজ্ঞতা আর বিভিন্ন বহুজাতিক ও দেশীয় প্রতিষ্ঠানের কর্মী নিয়োগ প্রক্রিয়ায় নিযুক্ত থাকা ব্যাক্তিবর্গের সাথে আলোচনার মাধ্যমে বের করার চেষ্টা করেছি ইন্টার্ভিউ বোর্ডে কোন বিষয়গুলোর উপর প্রতি লক্ষ্য রাখা খুবই জরুরী। সেই সাথে একজন রিক্রুটার আপনার থেকে কখনোই কোন কোন বিষয় সমূহ আশা করেন না।  আসুন তবে জেনে নেওয়া যাকঃ

 

সিভিতে উল্লেখিত বিষয় সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করলেও সুন্দরভাবে উত্তর দিনঃ

জব সার্কুলার প্রকাশের পর সংশ্লিষ্ট নিয়োগকর্তার কাছে অসংখ্য সিভি জমা হয় যা থেকে প্রতিষ্টানের চাহিদা অনুযায়ী পছন্দসই সিভি বাছাই করে ইন্টার্ভিউ কল করেন। নিয়োগকর্তাগণের পক্ষে নিদিষ্ট কারো সিভির ডিটেইলস মুখস্ত করে রাখা আদৌ সম্ভব না। তাই ইন্টার্ভিউ বোর্ডে সিভিতে উল্লেখিত বিষয় সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করলেও আপনাকে সুন্দর ও ভদ্রভাবে উত্তর দেয়া জরুরী। কখনো বলা যাবে না যে- “ প্রশ্নের উত্তর সিভিতে আছে , ওখান থেকে দেখে নিন।“

ইন্টার্ভিউ বোর্ডে সুন্দর, সাবলীল ও ভদ্রভাবে সকল প্রশ্নের উত্তর দেয়া উচিৎ।

 

পূর্বের বস সম্পর্কে সরাসরি নিন্দা না করাঃ

এটা খুবই কমন ব্যাপার যে বেশীরভাগ লোকজন যদিও কোম্পানি নয় , লাইন ম্যানেজার পরিবর্তনের জন্য জব সুইচ করে থাকেন; তারপরও ইন্টার্ভিউ বোর্ডে কখনোই বসকে নিয়ে নেগেটিভ মন্তব্য করা যাবে না। পূর্বের প্রতিষ্টানের বসকে নিয়ে অসুন্তষ্টি কিংবা নিন্দা পুরো সিচুয়েশানটাকেই আনকমফোর্টেবল করে তুলতে পারে।

 

বর্তমান জবের দায়িত্বসমূহ কিংবা ভেকেশান পলিসি নিয়ে অসন্তুষ্টি প্রকাশঃ  

চাকুরীতে আমাদের অনেকেরই এমন কিছু দায়িত্ব থাকে যা আদৌ আমরা করতে পছন্দ করিনা কিন্তু এটাকে জীবনেরই একটা অংশ হিসেবে ধরে নিতে হবে। এবং এটা নিয়ে ইন্টার্ভিউ বোর্ডে উচ্চবাক্য না করাই ভালো।  বর্তমান প্রতিষ্টানের ভেকেশান পলিসি নিয়েও নেগেটিভ আলোচনা না করাই উত্তম।

 

নিয়োগ প্রক্রিয়া চলাকালীন সময়ে লম্বা অবকাশ যাপনের প্লান থাকলে তা দ্রুত জানিয়ে দিনঃ

কর্ম ব্যস্ততার এই সময়ে একটু ফুসরত মিললেই আমরা ঘুরতে বেড়িয়ে পড়ি কর্ম ক্লান্তিকে বিদায় দিতে। কিন্তু অবকাশ যাপনে যাবার পূর্বে যদি নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরুর হয়ে যায় তবে কি করবেন আপনি ? আপনার যদি ভেকেশানে যাবার পরিকল্পনা আগে থেকেই করা থাকে তবে কাল ক্ষেপণ না করে দ্রুতই নিয়োগকর্তাকে তা জানিয়ে রাখুন , নতুবা  পুরো ব্যাপারটাই গোলমেলে হয়ে যেতে পারে।

নিয়োগ প্রক্রিয়া চলাকালীন সময়ে অবকাশ যাপনের পরিকল্পনা যদি আগে থেকেই করা থাকে তবে কাল ক্ষেপণ না করে দ্রুতই নিয়োগকর্তাকে তা জানিয়ে রাখুন।

 

নিয়োগকর্তার গুরুত্বপূর্ণ টাইম কিল করবেন নাঃ

আপনি যদি আবেদনকৃত জবের ব্যাপারে যথেষ্ট আগ্রহী না হন , তবে নিয়োগ প্রক্রিয়া তথা ইন্টার্ভিউ  শুরুর আগেই তা কতৃপক্ষকে নম্রভাবে জানিয়ে দিন। অহেতুক নিয়োগ প্রক্রিয়ায় অংশ নিয়ে রিক্রুটারের সময় কিল করবেন না। জবে আগ্রহী না হয়েও এমনি এমনি আবেদন করা কিংবা ইন্টার্ভিউ দিতে যাওয়া খুব একটা উচিৎ নয়।

 

কর্মরত কোম্পানি কিংবা পূর্বের কোন কোম্পানির কর্ম পরিবেশ নিয়ে ঘৃনার বহিঃপ্রকাশ অনুচিৎঃ 

ইন্টার্ভিউ বোর্ডে অনেক সময়ই বর্তমান বা আগে কাজ করা কোন কোম্পানি নিয়ে নেগেটিভ কথা বার্তা বলতে দেখা যায় যা পুরোপুরি আনপ্রফেশনাল টাইপের কাজ। এটা ঠিক যে আপনি আপনার পূর্বের কোন কোম্পানিকে পছন্দ না – ই করতে পারেন, তাই বলে চাকুরীর ইন্টার্ভিউতে তা কখনোই প্রকাশ করতে যাবেন না।

 

আনপ্রফেশনালিজম দেখাতে যাবেন নাঃ  

নিয়োগ প্রক্রিয়ায় অংশ নিতে কিভাবে আপনি কিভাবে ছুটি ম্যানেজ করবেন এটা একান্তই আপনার নিজস্ব ব্যাপার যা নিয়ে নিয়োগ কর্তাদের জিজ্ঞেস করতে যাবেন না। কিংবা কোন ট্রান্সপোর্ট ইউজ করে কিভাবে ইন্টার্ভিউর স্থলে পৌছাবেন, যেতে কতক্ষণ লাগতে পারে, ঐদিন ছেলেমেয়েকে কে স্কুল থেকে বাসায় নিয়ে যাবে – এধনের প্রশ্ন করতে যাবেন না।

 

পারতঃপক্ষে শিডিউল পরিবর্তনের অনুরোধ করতে যাবেন নাঃ

আপনি যদি রিক্রুটারের সাথে শিডিউল ফিক্সড করে থাকেন তবে তা পরিবর্তনের অনুরোধ করতে যাওয়া উচিৎ নয় কারণ আপনার সাথে কথা বলেই ঠিক করা সময়ে রিক্রুটমেন্টের সাথে জড়িত আরো অনেকের শিডিউল করা হয়েছে যেটা পরিবর্তন করতে গেলে অনেকেরই সমস্যা দেখা দিতে পারে এবং এক্ষেত্রে টিম ওয়ার্কের ব্যাঘাত ঘটতে পারে।

 

দুঃখিত, আমি লেট / দুঃখিত, আমাকে এখনই যেতে হবেঃ

খুব ইমারজেন্সী কিংবা যুক্তিযুক্ত কারণ ছাড়া নিয়োগকর্তার দেয়া সময়ের মধ্যেই নির্ধারিত স্থানে উপস্থিত হওয়া এবং নিদিষ্ট সময় পর্যন্ত ঐ স্থানে নিশ্চিন্তে অবস্থান করা উচিৎ। যে কোন ধরনের শিডিউল কনফ্লিক্ট এড়ানোর ঐদিন কাছাকাছি সময়ে নিয়োগ প্রক্রিয়ায় অংশ গ্রহণ ব্যাতিত অন্যকোন কাজের শিডিউল না রাখায় উত্তম।

 

আমার কোন কিছু জিজ্ঞেস করার নেইঃ

নিয়োগ প্রক্রিয়ায় ইন্টার্ভিউর শেষ পর্যায়ে এসে এইচ.আর. কিংবা বোর্ডের যে কেউ চাকুরী প্রার্থীর কাছে জানতে চান তার কিছু জানার বা জিজ্ঞেস করার আছে কিনা; সেক্ষেত্রে অবশ্যই কোম্পানির ভবিষৎ কর্ম পরিকল্পনা বা অন্য কোন বিষয় নিয়ে প্রশ্ন রাখা উচিৎ যা নিয়োগ কর্তার কাছে চাকুরী প্রার্থীর চাকুরীর প্রতি আগ্রহের কথাই প্রকাশ পাবে।

 

এছাড়াও ইন্টার্ভিউ বোর্ডে নেগেটিভ মনোভাব কিংবা কোন ধরনের উদ্বীগ্নতা প্রকাশ পায় এম যেকোন আচরণ থেকে বিরত থাকুন। অস্থিরতা পরিহার করে নিজেকে শান্ত রাখতে চেষ্টা করুন আর নিয়োগকর্তার মুখোমুখি হবার পূর্বে শতভাগ শিউর হয়ে নেন যে আপনি সবচেয়ে কমফোর্টেবল এবং প্রফেশনাল পোষাক পরিধাণ করে আছেন।।

শুভ হোক আপনার আগামীর পথচলা।

Hossain Joy
Hossain Joy
Greetings! I would love to be connected with you for learning and sharing purposes. Personally, I am a Sales & Marketing Professional, continuous learner and an enthusiastic sightseer who loves to take challenges as well. I do believe we should always try to contribute to the society in our own way from our own position to develop the society as a whole. Out of the belief, I initiated a blog (www.hossainjoy.com) in 2017 to share my learnings and experiences with the youngsters who usually are confused about career plan and many a time frightened of the future. In this blog, I am incorporating the articles and case studies reflecting my own experiences that I have gained throughout my career till date. It’s about struggles, failures and successes. I hope this will widen your understanding about the career path, personal development and job market. I also expect it will lead you to a decision point regarding your own career. In case of any related query, I’m readily available to assist you with best of my efforts! So, how may I help you?

1 Comment

  1. Ahsanul Karim Jony says:

    Thanks Bhaia. Very important gide line.

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *