কর্মক্ষেত্রে নতুন বস? সামলে নেবেন কিভাবে…?

কর্পোরেট নেতৃত্বের একাল সেকাল
December 29, 2018
কর্পোরেট জগতের প্রাথমিক চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় আপনি কতটুকু প্রস্তুত?
March 1, 2019

কর্মক্ষেত্রে নতুন বস? সামলে নেবেন কিভাবে...?

তানিশা করিম (ছদ্মনাম)‚ কয়েক বছর ধরে একটি নামকরা বহুজাতিক প্রতিষ্ঠানে কর্মরত আছেন এবং বেশ সাফল্যের সাথে কাজ করে চলেছেন। এর আগেও তিনি অন্য আরেকটি বহুজাতিক কোম্পানিতে সুনামের সহিত কাজ করেছেন। কর্পোরেট জগতে তিনি যে মোটামুটি ভালোই অভিজ্ঞতা অর্জন করেছেন তা নির্দ্বিধায় বলাই যায়। সম্প্রতি উনার ডিপার্টমেন্টের বস চলে যাওয়ায় নতুন একজন এসেছেন আর তাতেই গোলমালটা বেধেঁছে। ভদ্রলোক এসে নতুন দায়িত্ব পেয়েই পুরোদস্তুর কমান্ডো স্টাইলে কঠিনসব নির্দেশনা দেয়া শুরু করেছেন‚ পারলে দিনকে রাত আর রাতকে দিন বানিয়ে ফেলতে চাচ্ছেন। এমনকি প্রতিষ্ঠানে এতোদিন ধরে চলে আসা সুন্দর-সৌহার্দ্যপূর্ণ অফিস কালচারের তোয়াক্কা না করে নিজস্ব স্টাইলে পদ-পদবীর দাপট দেখিয়ে‚ অতিরিক্ত কাজের চাপ প্রয়োগ করে অন্য সবার জীবন অতিষ্ঠ করে তুলছেন। আর এতে করে অন্যদের মতো তানিশারও মানিয়ে নিতে বেশ বেগ পেতে হচ্ছে। আগের অভ্যস্ত হওয়া নিয়মে আর কাজ করা যাচ্ছেনা‚ নতুন সব নিয়মকানুন যুক্ত হচ্ছে প্রতিনিয়ত; বেড়েছে কাজের চাপ আর কর্মঘণ্টা।

 

এই অবস্থায় অনেক কর্মীই আসলে খেই হারিয়ে অন্যত্র চাকুরী খুঁজতে শুরু করেন। বর্তমান চাকুরীতে পরিপূর্ণভাবে মনোনিবেশ করা কঠিন হয়ে দাড়ায়। যার ফলস্রুতিতে পারফরমেন্স খারাপ হতে থাকে; অদৃশ্য এক মানসিক যন্ত্রণা দানা বাঁধতে শুরু করে। আস্তে আস্তে আত্নবিশ্বাসও কমতে থাকে।

 

এ অবস্থা থেকে উত্তোরণের উপায় কি তবে?

আসলে দ্রুত পরিবর্তনশীল আর প্রতিযোগীতা মূলক কর্পোরেট দুনিয়ায় টিকে থাকতে হলে নিজ নিজ দক্ষতা দিয়ে অতিরিক্ত কাজের চাপ আর পরিবর্তিত পরিস্থিতির সময়েও মাথা ঠান্ডা রেখে প্রতিষ্ঠানের নিয়মনীতি মেনে দৈনন্দিন কাজ চালিয়ে যেতে হবে; ভালো পারফর্ম করার চেষ্টাও অব্যাহত রাখতে হবে।

 

প্রতিদিনই নতুন কিছু শেখার মাধ্যমে নিজের দক্ষতা বাড়িয়ে সামনে এগিয়ে যেতে প্রথমতঃ সকল ভয়‚ উদ্বিগ্নতা দূর করে আত্নবিশ্বাসী হওয়ার চাই, চাই নিজের দক্ষতা আর সামর্থ্যের উপর পূর্ণ আস্থা রাখা। আর আত্নবিশ্বাস বাঁড়াতে প্রয়োজনে নিয়মিত ব্যায়াম করা যেতে পারে। প্রাতঃভ্রমণও মনকে সতেজতায় ভরিয়ে দিয়ে আত্নবিশ্বাসী হতে সহায়তা করে।

 

দ্বিতীয়তঃ হচ্ছে আপনার নিয়ন্ত্রণাধীন বিষয়াবলীর উপর নজর দিয়ে সামনে এগিয়ে যাওয়া যেমন সময়মতো অফিসে আসা, ঠিকঠাক রিপোর্ট দেয়া, কাজে মনোযোগী হওয়া ও দক্ষতার উন্নয়ন ইত্যাদি। আর যেসব বিষয় আমাদের নিজেদের নিয়ন্ত্রণের বাইরে (যেমনঃ অফিসে কেউ যদি পদ-পদবীর দাপট দেখিয়ে বেড়ানো, অযাচিত ভাবে কর্কশ  আচরণ শুরু করা, অফিস টাইমের পরেও বসিয়ে রাখা, নিয়মনীতির পরিবর্তন ইত্যাদি) সেসব নিয়ে মাথা খাটিয়ে আপাতত খুব একটা লাভ নেই।

 

তৃতীয়তঃ কর্মক্ষেত্রের সব কাজ সুন্দরভাবে সঠিক সময়ে শেষ করার জন্য নিজের মতো করে কাজ গুলোকে কয়েকটি ছোট ছোট ধাপে ভাগ করে নেওয়া যেতে পারে, প্রয়োজনে একটি রুটিনও তৈরি করে নিতে পারেন। আর ডেক্সটপে স্টিকি নোটও এক্ষেত্রে সহায়তা করবে বলে আশা করি।

 

চতুর্থতঃ সম্ভব হলে আপনার বসের সাথে ওয়ান টু ওয়ান আলোচনার চেষ্টা চালিয়ে যান। অফিস আপনার থেকে আসলে কেমন আউটপুট চাচ্ছে সেসবের আদ্যোপান্ত জেনে নিতে সচেষ্ট হোন তাহলে আপনার কাজ অনেকটাই সহজ হয়ে যাবে। আবার One2one সেশন ভুল বোঝাবুঝি‚ কর্কশ আচরণ এবং অন্যান্য অনেক সমস্যা সমাধান কল্পে কার্যকর ভূমিকা পালন করে।

 

পঞ্চমতঃ সরাসরি কলিগদের সহায়তা আর অভিজ্ঞদের মূল্যবান পরামর্শ নিতে পারেন। চাইলে আপনার মেন্টরের সাথেও আলোচনা করে উত্তোরণের  যথাযথ পথ বাতলে নিতে পারেন।

 

ফাইনালি‚ কাজের প্রতিটি মুহূর্তকে উপভোগ করার চেষ্টা করুন কারণ যতোটুকু কাজ আপনি শেষ করেছেন সাফল্যের পথেও ততটুকু পথ আপনি এগিয়ে গেলেন এবং ততটুকু কাজের চাপও কমে গেল। কাজেই অহেতুক দুঃচিন্তা না করে কাজের একেকটি ধাপ শেষ করার পর একটু হালকা দম নিতে পারেন, উঠে দাঁড়াতে পারেন, একটু হেঁটে আসুন কিংবা প্রিয় কোন মিউজিকে মন ভিজিয়ে আবার কাজ শুরু করতে পারেন।

 

আর যেকোন কাজের ব্যাপারে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেয়ার পূর্বে একটু সময় নিয়ে ভাবুন (প্রয়োজনে “20 hour rule” এর সহায়তা নিতে পারেন), এরপর পুরো কাজের একটি রিক্যাপ তৈরি করে তারপর কাজটি শেষ করে দাখিল করুন। আশা করা যায় যে – দ্রুতই অদ্ভূত সকল সমস্যা সমাধান হবে‚ সেই সাথে সাফল্যও আপনাকে ধরা দেবে ইনশাআল্লাহ।

কর্পোরেট জগতের প্রাথমিক চ্যালেঞ্জ কিভাবে সামলে নেবেন?

Follow me on Facebook . Check out my Website .

Hossain Joy
Hossain Joy
Greetings! I would love to be connected with you for learning and sharing purposes. Personally, I am a Sales & Marketing Professional, continuous learner and an enthusiastic sightseer who loves to take challenges as well. I do believe we should always try to contribute to the society in our own way from our own position to develop the society as a whole. Out of the belief, I initiated a blog (www.hossainjoy.com) in 2017 to share my learnings and experiences with the youngsters who usually are confused about career plan and many a time frightened of the future. In this blog, I am incorporating the articles and case studies reflecting my own experiences that I have gained throughout my career till date. It’s about struggles, failures and successes. I hope this will widen your understanding about the career path, personal development and job market. I also expect it will lead you to a decision point regarding your own career. In case of any related query, I’m readily available to assist you with best of my efforts! So, how may I help you?

3 Comments

  1. Md. Monir Hossain Khan says:

    20 hour rule কি?

    • Author says:

      It takes 10,000 hours to achieve mastery in a field. But it only takes 20 hours to get good at something, if you practice intelligently. Thank you.

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *