জাকারিয়া শুভ‚ সদ্য বিজনেস গ্র্যাজুয়েট। আর সব গ্র্যাজুয়েটদের মতো শুভ’র মাঝেও এই সময়ে এসে কিছুটা শিহরণ কাজ করছে। জীবনের একটি অধ্যায় শেষ করে কর্মজীবনের মতো গুরুত্বপূর্ণ অন্য আরেকটি চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হতে যাচ্ছে সে। ছাত্র জীবন থেকে কর্পোরেট জীবনে প্রবেশ করা যে মোটেও সহজ নয় তা খুব ভালোভাবেই জানে শুভ। এই সময়ে সচেতন না হলে পরবর্তীতে অনেক বড় ভুল করার সম্ভাবনা আছে তাও বিশ্ববিদ্যালয়ে আয়োজিত বিভিন্ন ক্যারিয়ার রিলেটেড সেমিনার-ওয়ার্কশপ থেকে জেনেছে সে।
অতি সম্প্রতি কবি আহসান হাবিবের স্মৃতি বিজড়িত অঞ্চল বরিশাল সফরে গিয়ে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্মরত প্রিয় অনুজদের সাথে সাক্ষাৎ পর্বের এক পর্যায়ে দেখা মেলে অত্র বিশ্ববিদ্যালয়ের মার্কেটিং বিভাগের একদল সদ্য গ্র্যাজুয়েট তরুণ-তরুণীদের সাথে। আজকের আয়োজন এমন সব সদ্য গ্র্যাজুয়েট তরুণ-তরুণীদের জন্যে:
১. আপন লক্ষ্যে অটল থাকুন:
আপনার যোগ্যতা ও দক্ষতার ভিত্তিতে লক্ষ্য নির্ধারণের পর তাতে অটল থেকে পরিকল্পনা মাফিক এগুলে‚ সাফল্য ধরা দেবেই ইনশাআল্লাহ্। আর পূর্বের লিখাতে ক্যারিয়ার নির্বাচন ও পরিকল্পনা নিয়ে বিশদ আলোচনা করেছি যেখানে উল্লেখ করেছি ক্যারিয়ারের সেক্টর নিদিষ্ট করার ব্যাপারেও। ক্যারিয়ার নির্বাচন কিংবা লক্ষ্য নির্ধারণে সমস্যা হলে এই ব্লগেই পড়ে নিতে পারেন সেই লিখাটি।
২. এক্সট্রা কারিকুলাম / কো-কারিকুলার কার্যক্রম সমূহ সিভিতে অন্তর্ভুক্ত করবেন:
বিশ্ববিদ্যালয় জীবনে ক্লাস রুমের বাইরের কার্যক্রম গুলোকে সুন্দর ভাবে সিভিতে ফুটিয়ে তুলতে হবে। উল্লেখ করতে হবে পদ-পদবী এবং যেসকল দায়িত্ব সমূহ পালন করেছেন তার মধ্য থেকে মেজর ৪/৫ টির কথাও উল্লেখ করা যেতে পারে।
৩. পার্ট-টাইম / ফুল টাইম কাজের অভিজ্ঞতা সিভিতে তুলে ধরবেন:
অনেকেই বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধি হয়ে বানিজ্য মেলায় অংশগ্রহণ কিংবা কোম্পানি প্রদত্ত নানা রকম প্রডাক্ট প্রমোশনাল কার্যক্রমে অংশ নিয়ে থাকেন যাকে পার্ট টাইম কাজের অভিজ্ঞতা হিসেবে সিভিতে অন্তর্ভুক্ত করা যেতে পারে। সেক্ষেত্রে পদ- পদবীর‚ কাজের মেয়াদকাল‚ দায়িত্ব সমূহ এবং কোম্পানির নাম সহ উল্লেখ করা যেতে পারে।
সদ্য গ্র্যাজুয়েটদের মিলন মেলাতে, মার্কেটিং বিভাগ, বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়।
৪. সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে নিজের শক্তিশালী প্রোফাইল তৈরীর পাশাপাশি কার্যকরী নেটওয়ার্ক তৈরী করুন:
বর্তমানে অনেক কোম্পানির নিয়োগকর্তাগণ কিন্তু সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে যোগ্য প্রার্থী খুঁজে থাকেন। তাই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সমূহ নিজের পজিটিভ উপস্থিতি একান্ত কাম্য। চাইলেই কিন্তু লিঙ্কড্ইনে আপনার যোগ্যতা আর দক্ষতার পাশাপাশি অর্জন সমূহও সুন্দর ভাবে তুলে ধরতে পারেন।
আসলে বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নরত অবস্থাতেই কাঙ্খিত সেক্টরের কর্মরত আছেন এমন ব্যাক্তিবর্গের সাথে কার্যকর যোগাযোগ গড়ে তোলা উচিৎ। এই নেটওয়ার্কিং সরাসরি জব সোর্স হিসেবে কাজ করার পাশাপাশি জব মার্কেটের বিভিন্ন খবরাখবর আর অসাধারণ সব দিক নির্দেশনা পেতে সহায়তা করবে।
৫. কর্পোরেট জগতের জন্যে নিজেকে প্রস্তুত করুনঃ
নিয়োগের পর দেখা যায় অনেক ফ্রেস গ্র্যাজুয়েটই বিশ্ববিদ্যালয়ের অগোছালো জীবন থেকে বের হয়ে এসে সহজে কর্পোরেট লাইফে অভ্যস্ত হতে পারেননা। ফলে অন টাইমে অফিসে আসা‚ সঠিক ড্রেস আপ নির্বাচন করা‚ মিটিংয়ের জন্যে যথাযথ প্রস্তুতি নেওয়া‚ রিপোর্টিংয়ের ক্ষেত্রে টাইমলাইন মিট করা‚ অন্যদের সাথে সহযোগীতা মূলক মনোভাব দেখানো‚ টিম ওয়ার্ক তথা প্রতিষ্ঠানের সবার সাথে প্রয়োজনীয় যোগাযোগ রক্ষা করে চলা; এমন সব বেসিক জিনিসের ক্ষেত্রে সমস্যা দেখা দেয়। যারা চাকুরীর শুরুতে উল্লেখিত বেসিক বিষয় সমূহে পারঙ্গমতা দেখাতে পারবেন‚ কর্পোরেটে তাদের দ্রুত উন্নতি অবধারিত।
৬. লার্নিংয়ের ক্ষেত্রে ক্ষুধার্ত থাকুন:
ক্যারিয়ারের শুরুতেই নতুন জিনিস শেখার প্রতি আপনার অদম্য আগ্রহের কথা জানান দিন। নিজের দায়িত্ব সমূহ ভালোভাবে বোঝে নেয়ার ক্ষেত্রেও প্রয়োজনীয় সংখ্যাক প্রশ্ন করুন। চাকুরীর শুরুতে যেকোন কাজে নিজ থেকে সহাযোগীতা মূলক মনোভাব দেখান‚ সম্ভব হলে আগেভাগে অফিসে চলে আসুন আর সময়ের দু-চার-পাচ মিনিট পরে অফিস ত্যাগ করুন‚ নিজেকে প্রমাণ করতে দায়িত্বের বাইরেও অতিরিক্ত কাজ করতে শিখুন‚ চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করার মানসিকতার তৈরী করুন; প্রয়োজনে নিজে থেকে নতুন নতুন বিজনেস আইডিয়া আর প্রজেক্ট প্রপোজাল দিতে পারেন। এসব কতৃপক্ষের কাছে আপনি যে একজন ডেডিকেটেড কর্মী সেই বার্তা-ই পৌঁছে দেবে যা আপনাকে দ্রুত সাফল্য এনে সহায়তা করবে।
৭. প্রথম চাকুরীতে নিজের সম্পর্কে পজিটিভ ব্র্যান্ড ইমেজ তৈরী করুন:
ক্যারিয়ারের শুরুতেই নিজের সম্পর্কে পজিটিভ ইমেজ তৈরীতে কাজ করুন। কাজের প্রতি আপনার অসাধারণ ডেডিকেশন আর কলিগদের সাথে সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্ক আপনাকে পরবর্তী ধাপে নিয়ে যেতে নিশ্চিত ভাবেই সহায়তা করবে।
কর্মক্ষেত্রে নিজ দায়িত্ব পালনে আত্মবিশ্বাসী হোন কারণ উর্ধ্বতন কর্মকর্তাগণ সব সময়ই চান যে- কর্মীরা সর্বদা নিজেদের দক্ষতা আর সামর্থ্যের উপর পূর্ণ আস্থা রেখে প্রতিষ্ঠানের উন্নতির জন্যে কাজ করবেন। তবে নবীন কর্মীদের এটাও মনে রাখতে হবে যে- অতিরিক্ত আত্মবিশ্বাস দেখাতে গিয়ে কোথাও যেন দাম্ভিকতা প্রকাশ না পায়। বরঞ্চ বিনয়ী মনোভাব বজায় রেখে কাজ করুন, মানুষ আপনাকে মনে রাখবে।
শুভ হোক আগামীর পথচলা।
পড়ুন-
স্বপ্নবাজ তারুণ্যের আমন্ত্রণে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে
Follow me on Facebook . Check out my Website .
14 Comments
অনেক কিছু জানা হল
আপনার নির্দেশনাগুলো আত্মবিশ্বাস বাড়িয়ে দেয়।
ধন্যবাদ ভাইয়া😊
Thank You.
[…] সদ্য গ্র্যাজুয়েটদের দরকারি ৭ পরামর্… […]
[…] সদ্য গ্র্যাজুয়েটদের দরকারি ৭ পরামর্… […]
[…] সদ্য গ্র্যাজুয়েটদের দরকারি ৭ পরামর্… […]
[…] সদ্য গ্র্যাজুয়েটদের দরকারি ৭ পরামর্… […]
[…] সদ্য গ্র্যাজুয়েটদের দরকারি ৭ পরামর্… […]
[…] সদ্য গ্র্যাজুয়েটদের দরকারি ৭ পরামর্… […]
[…] সদ্য গ্র্যাজুয়েটদের দরকারি ৭ পরামর্… […]
[…] সদ্য গ্র্যাজুয়েটদের দরকারি ৭ পরামর্… […]
[…] সদ্য গ্র্যাজুয়েটদের দরকারি ৭ পরামর্… […]
[…] আরো পড়ুনঃ সদ্য গ্র্যাজুয়েটদের দরকারি ৭ পরামর্… […]
[…] সদ্য গ্র্যাজুয়েটদের দরকারি ৭ পরামর্… […]