নিজেই বানিয়ে নিন আকর্ষণীয় সিভি!!!

সমাজকে বদলে দেয়া-ই যেন এখনকার মূলমন্ত্র
December 13, 2017
কাভার লেটার কি এবং কেন এটি গুরুত্বপূর্ণ ?
December 21, 2017

গ্র্যাজুয়েশন শেষে চাকুরীতে প্রবেশের জন্য যে জিনিসটি খুবই প্রয়োজন তা হচ্ছে একটি ভালো মানের সিভি; যা আপনার প্রয়োজনীয় কাজের দক্ষতা , অভিজ্ঞতা, শিক্ষাগত যোগ্যতা এবং সর্বোপরি আপনাকে উপস্থাপন করবে। চাকুরী, কাজের ধরণ বা ব্যাক্তি বিশেষ অনুযায়ী সিভির ভিন্নতা থাকলেও কিছু বিষয় আপনার সিভিতে থাকা চাই-ই চাই; যা দেখে নিয়োগকর্তা আপনাকে সহজে অন্যদের থেকে আলাদা করতে পারবে এবং এটি নিয়োগ প্রক্রিয়ার পরবর্তী ধাপে আপনাকে এগিয়ে নেবে। তবে চলুন না জেনে নেওয়া যাক সিভিতে কোন কোন বিষয় অন্তর্ভুক্ত হওয়া চাইঃ

১। নাম ও বর্তমান ঠিকানাঃ

শুরুতেই জানিয়ে দিন আপনার পুরো নাম! এরপর লিখে ফেলুন আপনার বর্তমান ঠিকানা সেই সাথে দ্রুত যোগাযোগের জন্য আপনার মোবাইল নাম্বারটিও, লিখে দিন আপনার এক্টিভ ইমেইল আইডিও। চাইলে আপনার প্রফেশনাল নেটওয়ার্ক অর্থাৎ লিঙ্কডইন (LinkedIn) আইডির লিঙ্কও দিয়ে দিতে পারেন যাতে নিয়োগকর্তা আপনার সম্পর্কে আরো বিশদ জানার সুযোগ পায়।

২। ক্যারিয়ার অবজেক্টিভ / সামারিঃ

সদ্য পাশ করা চাকুরী প্রার্থী বা ১-২ বছরের অভিজ্ঞ চাকুরী প্রার্থীদের জন্য ক্যারিয়ার অবজেক্টিভ আর ক্যারিয়ার সামারি হচ্ছে তারচেয়ে বেশী অভিজ্ঞ প্রার্থীদের জন্য প্রযোজ্য।

ক্যারিয়ার অবজেক্টিভ অংশে আপনি আপনার চাকুরিক্ষেত্রে বর্তমান লক্ষ্য উল্লেখ করুন এবং আপনার যোগ্যতা কিভাবে প্রকাশিত জব সার্কুলারের সাথে মিলে এবং কিভাবে প্রতিষ্ঠানের প্রয়োজন মেটাতে পারে তার প্রেক্ষিতে উপস্থাপন করুন। চাকুরির জন্য উপযুক্ত ইতিবাচক দিকগুলো সংক্ষিপ্তভাবে উল্লেখ করুন। আসল কথা হচ্ছে, জব সার্কুলার বা কোম্পানির প্রয়োজনের সাথে খাপ খাইয়ে ক্যারিয়ার অবজেক্টিভ লেখা খুবই জরুরী। আপনি কোম্পানিতে কিভাবে অবদান রাখতে পারবেন তার ওপর অধিক গুরুত্বারোপ করুন, কোম্পানির কাছ থেকে আপনি কি আশা করছেন তার উপর নয়।

ক্যারিয়ার সামারিতে আপনি এতোদিন যেসব প্রতিষ্ঠানে যা যা কাজ করেছেন তার একটি সংক্ষিপ্ত ও সুন্দর উপস্থাপনা দিন। জব সার্কুলারের সাথে মিল রেখে নিজের কাজগুলোকে নিয়োগকর্তার কাছে ৪/৫ লাইনের মধ্যে তুলে ধরুন। কখনোই সিভিতে অন্য কারো ক্যারিয়ার অবজেক্টিভ বা সামারি কপি পেস্ট করতে যাবেন না।

৩। পার্ট টাইম/ ইন্টার্নশিপ/ ফুলটাইম কাজের অভিজ্ঞতার বিবরণঃ

আপনি যদি সদ্য গ্র্যাজুয়েট হোন তবে আপনি লক্ষ্য রাখুন কখনো কোন পার্ট টাইম জব করেছেন কিনা যা চাইলেই আপনি সিভিতে উল্লেখ করতে পারেন। যদি পার্ট টাইম কাজের অভিজ্ঞতা থেকে না থাকে তবে হতাশ হবার কিছু নেই, সেক্ষেত্রে ইন্টার্নশিপ করে থাকলে তা গুরুত্ব সহকারে তুলে ধরতে পারেন।

আর অভিজ্ঞদের ক্ষেত্রে সর্বশেষ প্রতিষ্ঠান ধরে এগিয়ে যাবেন। তবে প্রত্যেক অভিজ্ঞতা লিখার ক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠানের নাম ও নিজের পদবী লিখতে ভুলবেন না। মনে রাখবেন আপনি শুধুমাত্র আপনার কাজের মূল দায়িত্বসমূহ উল্লেখ করবেন যাতে করে আপনি ৫-৬ টি লাইনের মধ্যেই নিজের কাজসমুহ তুলে আনতে পারেন।

৪। শিক্ষাগত যোগ্যতার বিবরণঃ

সর্বশেষ অর্থাৎ সর্বোচ্চ ডিগ্রী সবার প্রথমে লিখবেন তারপর আস্তে আস্তে বাকি ডিগ্রীগুলো তুলে ধরবেন। এখানে অবশ্যই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের নাম , অর্জিত ডিগ্রীর নাম , বিভাগ বা মেজর সাবজেক্টের নাম আর রেজাল্ট উল্লেখ করবেন।

৫। প্রফেশনাল সার্টিফিকেশন / ট্রেনিংঃ

আজকাল অনেকেই নিজেদের দক্ষতা বাঁড়াতে প্রফেশনাল কোর্সে ভর্তি হয়ে থাকেন কিংবা অনেকেই নিদিষ্ট বিষয়ের উপর প্রয়োজনীয় ট্রেনিং নিয়ে থাকেন যা আপনি অবশ্যই সিভিতে তুলে ধরবেন এবং এটি আপনাকে অবশ্যই অন্যদের থেকে এগিয়ে রাখবে। সেক্ষেত্রে অবশ্যই অংশ নেওয়া ট্রেনিংয়ের নাম, প্রতিষ্ঠানের নাম এবং কাভার করা টপিক গুলো পয়েন্ট আকারে তুলে ধরতে পারেন।

৬। কো-কারিকুলার / এক্সট্রা -কারিকুলার এক্টিভিটিসঃ

কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয় জীবনে অনেকেই অনেক সহ-পাঠ্যক্রম বা অতিরিক্ত পাঠ্যক্রমের সাথে জড়িত থাকতে দেখা যায় যা কর্ম জীবনে গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব ফেলে। এটি অবশ্যই সিভিতে অন্তরভুক্ত করা উচিৎ যেহেতু কো-কারিকুলার নি:সন্দেহে যোগাযোগ দক্ষতা, অর্গানাইজিং , উপস্থাপনা সহ অন্যন্য প্রয়োজনীয় দক্ষতা তৈরিতে সহায়ক ভুমিকা পালন করে থাকে।

৭। পার্সোনাল তথ্যঃ

তথ্য প্রযুক্তির এই সময়ে এই অংশে খুব বেশী তথ্য দেওয়ার প্রয়োজন নেই। পিতা –মাতার নাম, বয়স নির্ণয়ের জন্য জন্ম তারিখ আর স্থায়ী ঠিকানা সংযোজন করা যেতে পারে।

৮। রেফারেন্সঃ

হাজার হাজার প্রার্থীর ভিড়ে স্বল্প সময়ে একজন নিয়োগকর্তার পক্ষে সদ্য গ্র্যাজুয়েট একজন চাকুরী প্রার্থীর আদ্যোপান্ত জানা সম্ভব হয়ে উঠে না। তাই নিয়োগ প্রক্রিয়া তরান্বিত করতে অনেক বহুজাতিক ও দেশীয় কোম্পানি প্রায়ই প্রার্থীকে চূড়ান্ত নির্বাচনের পূর্বে তার দেয়া তথ্য অনুযায়ী রেফারারের সঙ্গে যোগাযোগ করতে দেখা যায়।

রেফারেন্স হিসেবে দুইজনের নাম উল্লেখ করা যেতে পারে। একজন সদ্য গ্র্যাজুয়েট তার বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজ বিভাগ থেকে একজন শিক্ষকের নাম , পদবী, ঠিকানা্‌ মোবাইল/ইমেইল সহ দিতে পারেন। আরেকজনকে দিতে পারেন সংশ্লিষ্ট কর্পোরেট জগৎ থেকে। তবে সিভিতে কাউকে রেফারেন্স দেয়ার পূর্বে অবশ্যই অনুমুতি নিতে ভুলবেন না যেন। আর এমন কাউকে রেফারেন্স হিসেবে দিবেন যিনি আপনার স্কিলস বা কর্ম দক্ষতা সম্পর্কে পুরোপুরি ওয়াকিবহাল।

আর সিভিতে অবশ্যই ছবি সংযুক্ত করতে ভুলবেন না। সিভিতে নানা রকম কালার ব্যবহার থেকে বিরত থাকবেন কারণ এটা দৃষ্টিকটু দেখায়। তারচেয়ে বরং যতটা সাদামাটা আর গোছানো রাখবেন ততই ভালো। আপনি চাইলে আপনার দক্ষতা ও যোগ্যতার উপর অধিক ফোকাস রাখতে পারেন। সিভি ফাইনালি সাবমিটের পূর্বে বানান বা ব্যাকরণগত ভুল আছে কিনা তা পুনরায় যাচাই করে নেবেন। সর্বদা সিভির সাথে কাভার লেটার দিতে চেষ্টা করবেন যা আপনাকে নিয়োগ প্রক্রিয়ার পরবর্তী ধাপে নিয়ে যেতে সহায়ক ভূমিকা রাখবে।।

সুন্দর ও সাফল্যমণ্ডিত হোক আপনার ক্যারিয়ারের পথচলা।।

গ্র্যাজুয়েশনের পর এমবিএ নাকি জব প্রশ্নে কোনটিকে বেছে নেবেন?

কোথায় পাবেন কর্পোরেট জব সার্কুলার?

Follow me on Facebook . Check out my Website .

Hossain Joy
Hossain Joy
Greetings! I would love to be connected with you for learning and sharing purposes. Personally, I am a Sales & Marketing Professional, continuous learner and an enthusiastic sightseer who loves to take challenges as well. I do believe we should always try to contribute to the society in our own way from our own position to develop the society as a whole. Out of the belief, I initiated a blog (www.hossainjoy.com) in 2017 to share my learnings and experiences with the youngsters who usually are confused about career plan and many a time frightened of the future. In this blog, I am incorporating the articles and case studies reflecting my own experiences that I have gained throughout my career till date. It’s about struggles, failures and successes. I hope this will widen your understanding about the career path, personal development and job market. I also expect it will lead you to a decision point regarding your own career. In case of any related query, I’m readily available to assist you with best of my efforts! So, how may I help you?

5 Comments

  1. […] সেইসাথে নিজের রিজুমী আপডেট করিয়ে নেয়া, দেশের সবচেয়ে বড় অনলাইন জব পোর্টাল বিডিজিবস ডটকম আর LinkedIn এ একাউন্ট খোলা এবং সোস্যাল মিডিয়ায় বিভিন্ন ক্যারিয়ার/জব সার্কুলার রিলেটেড পেইজে জবের খোঁজ খবর অতি জরুরী।সিভি বা রিজুমি নিয়ে পড়ুনঃ নিজেই বানিয়ে নিন আকর্ষণীয় সিভি!!! […]

  2. […] আর নিয়োগ প্রক্রিয়া নিয়ে অভিজ্ঞতা শেয়ার করতে চাইলে বলা যায় যে- এন্ট্রি লেভেলে কর্মী নিয়োগের ক্ষেত্রে দেশী-বিদেশী প্রত্যেক প্রতিষ্ঠানেরই নিজস্ব বা ইন্টারনাল নিয়োগ প্রক্রিয়া রয়েছে যা অনুসরণ করে কোম্পানিগুলো তাদের প্রয়োজনীয় সংখ্যাক জনবল নিয়োগ করে থাকেন। তবে একটি সিভি কিন্তু লাগবেই লাগবেই! আর তাই নিজেই বানিয়ে নিন আকর্ষণীয় সিভি!!! […]

  3. […] এটি দেশের সবচেয়ে বড় অনলাইন জব পোর্টাল যেখানে প্রতিদিন শত শত চাকুরীর বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হয়। আপনি চাইলে খুব সহজেই সেখানে নিজের একটি একাউন্ট খুলে নিতে পারেন। আর এই একাউন্টের মাধ্যমে আপনি আপনার যোগ্যতার ভিত্তিতে পছন্দসই জবে আবেদন করতে পারবেন। আবার সরাসরি আবেদনের জন্যে নিজেই বানিয়ে নিন আকর্ষণীয় সিভি!!! […]

  4. […] এতোসবের মধ্যেও নিজেই বানিয়ে নিন আকর্ষণীয় সিভি!!! […]

  5. […] এতোসবের মধ্যেও নিজেই বানিয়ে নিন আকর্ষণীয় সিভি!!! […]

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *