বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠান (বিআইডিএস) এর সাম্প্রতিক গবেষণায় উঠে এসেছে যে- নিজেদের পড়াশোনা শেষ করার পর ছয় মাসের মধ্যে অর্ধেক তরুণ চাকরি পেয়ে যান। ছয় মাস থেকে দুই বছর পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হয় ৩০ শতাংশকে। আর দুই বছরের বেশি সময় অপেক্ষা করতে হয় ১৮ শতাংশ তরুণকে! সূত্র: প্রথম আলো
অধিক জনসংখ্যাবহুল এই বাংলাদেশে আসলে অনেক বিষয়াবলীই আমাদের নিয়ন্ত্রণের বাইরে। এই যেমন ট্রাফিক জ্যাম, বায়ুদূষণ, দূর্নীতি ইত্যাদি চাইলেই আপনি-আমি একা বন্ধ করতে পারবোনা কারণ এসব আমার-আপনার একক নিয়ন্ত্রণের বাইরেই বলা চলে। ঠিক তেমনি চাইলেই হুটহাট করে যেকেউ এদেশের লাখ লাখ তরুণ-তরুনীদের চাকুরির ব্যবস্থা করে দিতে সম্ভবত পারবেন না।
এক্ষেত্রে বাস্তবতা এবং সীমাবদ্ধতার কথা মাথায় রেখে শিক্ষার্থীদের উচিৎ বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নের সময়ে কাঙ্খিত জবের জন্যে প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি নেয়া, দরকারি সব দক্ষতাসমূহ যেমনঃ সুন্দর উপস্থাপনা, যোগাযোগ দক্ষতা, সমস্যা সমাধানে পটু হওয়া, চ্যালেঞ্জ নেওয়ার মানসিকতা, ইংরেজি ভাষার উপর দখল, এম এস ওয়ার্ড, এক্সেল, ই-মেইল করতে পারা ইত্যাদি অর্জনে মনোনিবেশ করা; যাতে করে অন্তত পড়াশোনা শেষ করার পর অন্যন্য প্রতিযোগির চেয়ে এগিয়ে থেকে ছয় মাসের মধ্যে চাকুরি নিশ্চিত করা যায়। কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে জব প্রস্তুতির ব্যাপারটি অনেক শিক্ষার্থীর কাছে অজানা। পড়ুন কর্মক্ষেত্রে তরূণেরা কিভাবে নেতৃত্ব দেবেন?
চাকুরির প্রস্তুতির অংশ হিসেবে ক্যারিয়ার রিলেটেড সেমিনার- ওয়ার্কশপে অংশ নিতে পারেন।
আর জবের প্রস্তুতিতে যাওয়ার আগে জব সেক্টর সম্পর্কে জানাও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আমাদের দেশের জব সেক্টরকে প্রধানতঃ দুইভাগে ভাগ করা যায়ঃ
– সরকারি সেক্টর যেখানে চাকুরীর সুযোগ তুলনামূলক কম এবং এখানে সুযোগ পাওয়ার ক্ষেত্রে নানান সীমাবদ্ধতা আছে।
– বেসরকারি সেক্টর যা দেশের চাকুরীর বাজারে সবচেয়ে বড় জায়গা। তো বৃহৎ এই সেক্টর নিয়ে ভেবে দেখতে পারেন।
ব্যাক্তিগত ভাবে আমার মতামত হচ্ছেঃ এক. যথাযথ প্রিপারেশন নেয়া যাতে করে প্রথম ছয় মাসের মধ্যেই চাকুরিতে প্রবেশ করা যায়। এক্ষেত্রে বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নকালীন সময়ে বিভিন্ন সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠনের কাজে নিজেকে সম্পৃক্ত করা যেতে পারে, ডিবেটিং সহ নানা প্রতিযোগিতায় অংশ গ্রহণের মাধ্যমে নিজেকে শানিত করা যেতে পারে। গ্র্যাজুয়েশন কোর্সের পরে ইন্টার্নশিপকে অবশ্যই লার্নিংয়ের এক বিরাট সুযোগ হিসেবে নেয়া চাই।
সেইসাথে নিজের রিজুমী আপডেট করিয়ে নেয়া, দেশের সবচেয়ে বড় অনলাইন জব পোর্টাল বিডিজিবস ডটকম আর LinkedIn এ একাউন্ট খোলা এবং সোস্যাল মিডিয়ায় বিভিন্ন ক্যারিয়ার/জব সার্কুলার রিলেটেড পেইজে জবের খোঁজ খবর অতি জরুরী।সিভি বা রিজুমি নিয়ে পড়ুনঃ নিজেই বানিয়ে নিন আকর্ষণীয় সিভি!!!
প্রফেশনাল কাউকে দিয়ে রিজুমি আপডেট করিয়ে নিতে পারেন যাতে করে আবেদনপত্র যাচাই-বাছাই করে শর্ট লিস্ট তৈরী করার সময় আপনি বাদ না পড়েন।
দুই: দুই বা ততোধিক বছর কাঙ্ক্ষিত জবের জন্যে বসে বসে অপেক্ষা করার কোন মানে নেই তারচেয়ে বরং যে কোনকিছু শুরু করা উত্তম। হতে পারে সেটা ক্ষুদ্র পরিসরে ব্যবসা, হতে পারে পার্টটাইম জব, হতে পারে কাঙ্খিত জবের চেয়ে স্বল্প বেতনের চাকরি যা আপনাকে লার্নিং আর অভিজ্ঞতা দেবে, এই লার্নিং- অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়ে দ্রুততম সময়ে আপনি কাঙ্খিত জায়গায় পৌঁছে যেতে পারেন। কাজেই বড় পজিশন আর হ্যান্ডসাম সেলারির জন্যে মাসে পর মাস বসে না থেকে বরং অভিজ্ঞতা অর্জনে মনোযোগী হোন, আল্টিমেটলি এই অভিজ্ঞতা-ই একদিন সম্পদে পরিগণিত হবে।
জেনে নিন কর্পোরেট জগতের প্রাথমিক চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় আপনি কতটুকু প্রস্তুত?
পড়ুন- গ্র্যাজুয়েটদের বিভিন্ন ইন্ডাস্ট্রি সম্পর্কে জানাও জরুরী
Follow me on Facebook . Check out my Website .