রিপোর্টিং বসের সাথে আপনার সম্পর্ক কেমন হওয়া উচিত ?

কাভার লেটার কি এবং কেন এটি গুরুত্বপূর্ণ ?
December 21, 2017
গ্র্যাজুয়েটদের চাকুরীর বাজার সম্পর্কে জানাও জরুরী
January 1, 2018

রিপোর্টিং বসের সাথে পজিটিভ সম্পর্ক কর্মক্ষেত্রে খুবই কার্যকর ও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে

রিপোর্টিং বসের সাথে পজিটিভ সম্পর্ক কর্মক্ষেত্রে খুবই কার্যকর ও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। উভয় পক্ষকেই কিছু বিষয় মাথায় রেখে চললে সহজেই অনেক কনফ্লিক্ট যেমন এড়ানো যায়, তেমনি প্রফেশনাল সীমারেখাটাও বজায় থাকে। একসাথে কাজ করবেন, কাজ শেষে কদাচিৎ হ্যাং আউটে যাবেন চেক ইন দিবেন, সপ্তাহান্তে পার্টিতে দেখা হবে , বসও সব সময় ফ্রেন্ডলি বিহেব করার চেষ্টা করেন, আপনিও বসের খোঁজ-খবর নেন কিন্তু সাবধান! তাই বলে আপনার বসকে কখনোই আপনার বেস্ট ফ্রেন্ড ভেবে বসবেন না যেন, তারচেয়ে বরং মেন্টর ভাবতে পারেন। আপনার বস একাধারে একজন মোটিভেটর, কোচ আবার কখনো কখনো আপনার জাজ হিসেবে কাজ করেন। আর তাই কাজের জায়গায় তাকে যথাযথ সম্মান প্রদর্শন করতে কখনো ভুলবেন না।

বস তথা অফিসের সবার সাথেই ভালো সম্পর্ক বজায় রাখার দায়িত্ব কিন্ত আপনার উপরই বেশী বর্তায়। তাই আসুন জেনে নেওয়া যাক কিভাবে প্রফেশনালিজম বজায় রেখে আমরা রিপোর্টিং বসের সাথে সম্পর্কের তিক্ততাকে দূরে সরাতে পারিঃ

নিয়ম মেনে চলুন এবং সময়ানুবর্তী হোনঃ

একজন কর্মীর প্রতি তার রিপোর্টিং বসের নেতিবাচক ধরণা আসবে তখনই যখন কেউ নিয়মিত দেড়ি করে অফিসে আসে, সময়মতো রিপোর্ট জমা না দেয়, কিংবা নিয়মিতই ভুল তথ্য সংবলিত রিপোর্ট প্রদান করে থাকে; তখন আসলে বিশ্বাসটাই পুরোপুরি উঠে যায়। তাই সদ্য চাকুরীতে যোগদান করা সবারই উচিৎ উল্লেখিত বিষয়গুলোর উপর লক্ষ্য রাখা।

 

বিশ্বাসযোগ্যতা অর্জন করুনঃ

তুমুল প্রতিযোগীতা মূলক এই যুগে প্রত্যেক কোম্পানিকেই প্রতিযোগীতার দিক বিবেচনায় কিছু পলিসিগত গোপনীয়তা পালন করা হয়ে থাকে যা সংশ্লিষ্ট সবাইকেই বিশ্বাসযোগ্যতার সহিত পালন করতে হবে। এক্ষেত্রে বসের কাছে অবশ্যই নিজেকে বিশ্বাসযোগ্য করে গড়ে তুলতে হবে।

 

 আচারণে উদ্ধত প্রকাশ কিংবা অফিসিয়াল কাজকে অবজ্ঞা করবেন নাঃ

এমনটা হতেই পারে যে আপনি ও আপনার বস পূর্ব থেকেই একে অন্যের পরিচিত ছিলেন কিংবা একই বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করেছেন অথবা দু’জনে একই ক্লাবের মেম্বার হিসেবে আছেন কিন্তু তাতে করে তাকে হালকাভাবে নেয়া, আচারণে উদ্ধত প্রকাশ করা কিংবা তার দেয়া অফিসিয়াল কাজকে অবজ্ঞা করার কিছুই নেই। প্রফেশনালিজম না মেনে যদি আপনি সেটা করেন তবে আপনার বসই আপনাদের মাঝে দূরত্ব তৈরির রাস্তা বানিয়ে নেবেন যা দুজনের জন্যেই খুব একটা সুখকর নয়।

 

আগে শোনার অভ্যাস গড়ে তুলুন তারপর আপনার বক্তব্য উপস্থাপন করুন। Source: Google.com 

বসের বক্তব্য মনোযোগ দিয়ে শুনুন তারপর আপনার বক্তব্য পেশ করুনঃ

আবার যদি এমনও হয় যে আপনার বস মিটিংয়ে কোন নিদিষ্ট বিষয়ে কথা বলছেন কিংবা কারো সাথে এককভাবে কোন নিদিষ্ট বিষয়ে কথা বলছেন কিন্তু আপনি মনে করছেন সেই নিদিষ্ট বিষয়ে আপনি আপনার বস থেকেও ভালো জানেন; সেক্ষেত্রে তাকে তার বক্তব্য শেষ করতে দিন, কথার মাঝখানে তাকে আটকাতে যাবেন না। আপনার কিছু বলার থাকলে প্রয়োজনে বসের অনুমতি নিন তারপর ভদ্রভাবে আপনার বক্তব্য পেশ করুন।

 

 যে কোন ভুলের দুঃখ প্রকাশ করুন এবং প্রয়োজনীয় শিক্ষা নিনঃ

কর্মক্ষেত্রে নানা রকম কাজ করতে গেলে ভুল হওয়া বা ভুল করাটাই স্বাভাবিক, সেই ভুলের জন্য যত দ্রুত সম্ভব বিনয়ের সহিত দুঃখ প্রকাশ করে ফেলুন এবং সম্ভব হলে এ থেকে প্রয়োজনীয় শিক্ষা নিন। এতে করে আপনার মনে কোন অপরাধবোধ কাজ করবে না এবং আপনার বসও আপনাকে একজন বিনয়ী ও সৎ মানুষ হিসেবে জানবে।

 

ভয় আর লজ্জাকে দূরে ঠেলে দিন:

ভয় আর লজ্জাকে দূরে ঠেলে যেকোন রিপোর্ট বা এসাইনমেন্টের বিপরীতে লাইন ম্যানেজার থেকে প্রয়োজনীয় ফিডব্যাক নিন; তাতে ভুল-ত্রুটি আর আপনার উন্নতির জায়গা বেড়িয়ে আসবে। ফিডব্যাক নেওয়ার মাধ্যমে নিজেকে শুধরে নিয়ে ভালো পারফর্ম করতে পারবেন। যেহেতু ক্যারিয়ার আপনার তাই নিজের উন্নতির দিকে আপনাকে নজর দিতেই হবে। আর এটা করতে গিয়ে বসকে বুঝিয়ে দেন যে আপনিও টিমে অবদান রাখতে চান, অবদান রাখতে চান কোম্পানিকে এগিয়ে নিতেও ।

 

 হেলদি রিলেশনশিপ গড়ে তুলুন:

আমরা সবাই জানি যে যেকোন হেলদি রিলেশনশিপের জন্য যোগাযোগ কতটা গুরুত্বপূর্ণ, তাই যে কোন বিষয়ে নিয়মিত লাইন ম্যানেজারকে আপডেট রাখুন, প্রয়োজনে দরকারি পরামর্শ নিন, কোন ব্যাপারে খটকা লাগলে বসের সাথে খোলা-মেলা আলোচনা করুন, টিম ওয়ার্কে ফোকাস করুন এবং বিশ্বস্ততা অর্জনের চেষ্টা করুন।

 

পূর্ণ শ্রদ্ধা প্রদর্শন করুনঃ

যেকোন অবস্থাতেই কর্মক্ষেত্রে বসের প্রতি পূর্ণ শ্রদ্ধা প্রদর্শন করুন, তার পদকে মূলায়ন করুন; তাতে আপনার গ্রহণযোগ্যতা বাড়বে বৈ কমবে না। আর জীবনের সর্ব ক্ষেত্রে সিনিয়রদের শ্রদ্ধা করা উত্তম ব্যাক্তিত্বের পরিচায়ক। যে কোন কিছুতে অহেতুক তর্কে জড়াবেন না বরং নম্র ও ভদ্রভাবে সব সময় আপনা বক্তব্য পরিবেশন করার চেষ্টা করবেন। আবার এমন যদি হয় যে আপনি জেনে গেলেন আপনার বস রিজাইন করেছেন, আর মাত্র অল্প কিছুদিন আপনার সাথে কাজ করবেন তখনও তার প্রতি যথাযথ সম্মান প্রদর্শন করুন।

উপরে বর্ণিত বিষয়াবলীর উপর লক্ষ্য রেখে কাজ করলে কর্মক্ষেত্রে অনেক কনফ্লিক্ট কমে আসবে এবং উভয় পক্ষের মাঝেই সুন্দর সম্পর্ক বজায় থাকবে বলে আশা করা যায়। তাছাড়া প্রত্যেক প্রতিষ্ঠানেই নিজস্ব কিছু নিয়ম -নীতি বা আচরণগত পলিসি থাকে যা সব লাইন ম্যানেজার ও তার অধীনে কাজ করা সবাইকেই অপছন্দ হলেও মেনে চলতে হয়।

কেন একজন সফল, অন্য জন ব্যর্থ হয়? জানতে চাইলে পড়তে পারেন এই লিঙ্কে গিয়েঃ  কেন একজন সফল, অন্য জন ব্যর্থ ?

জেনে নিন কর্পোরেট জগতের প্রাথমিক চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় আপনি কতটুকু প্রস্তুত?

Follow me on Facebook . Check out my Website .

Hossain Joy
Hossain Joy
Hossain Joy is a seasoned professional in the corporate world, bringing a wealth of experience and insights to the table. With a successful career spanning 12 years, he has navigated the intricacies of the corporate landscape with resilience and determination. Hossain Joy is not only an accomplished writer but also a mentor who is passionate about sharing the valuable lessons learned throughout his journey. He has authored the inspiring book "Journey to My First Corporate Job," offering a compelling narrative of his early career experiences, challenges, and triumphs. In addition to his book, Hossain Joy extends his reach through a thought-provoking blog, where he imparts practical advice and wisdom gained from years of corporate life. He aims to guide and inspire young professionals, providing them with the tools to navigate their own paths to success. Whether through the written word or personal mentorship, Hossain Joy remains dedicated to empowering the next generation of professionals, fostering a community of growth, resilience, and achievement. Connect with Hossain Joy on Facebook.com/Hossain.Joy for more insights and updates on his journey and upcoming projects.

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *