গ্র্যাজুয়েশনের পর এমবিএ নাকি জব প্রশ্নে কোনটিকে বেছে নেবেন?

ভাবনায় আধুনিক ইফতার ও সেহরি পার্টিঃ
August 14, 2017

এমবিএ নাকি জব

সদ্য গ্র্যাজুয়েশন তথা বিবিএ শেষ করা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফ্রেশ গ্র্যাজুয়েটরা ‘এমবিএ’ অথবা ‘চাকরি’ কিংবা এমবিএর পাশাপাশি জব, কোনটাকে বেছে নিলে ভালো হয়-তা নিয়ে বেশ দো-টানায় পড়তে দেখা যায়। বিষয়টি একাধারে বেশ চিন্তার এবং সরাসরি ক্যারিয়ার রিলেটেড। একজন ফ্রেশ গ্র্যাজুয়েটের পক্ষে এমন গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপারে একক সিদ্ধান্ত নেওয়া সত্যিই অনেক বেশি কঠিন। এ ব্যাপারে আমার নিজস্ব মতামত আর অভিজ্ঞতাটুকুই কেবল তুলে ধরতে পারি। সিদ্ধান্ত নেওয়ার ব্যাপারটা একান্তই যার যার ক্যারিয়ার রিলেটেড চিন্তা-ভাবনা আর সামগ্রিক পরিস্থিতির উপর নির্ভর করছে। তবে যা ই করেন না কেন, খুব ভেবে চিন্তে আর অভিজ্ঞদের পরামর্শ নেয়া জরুরী।

গ্র্যাজুয়েশনের পর কাঙ্ক্ষিত জবের জন্য প্রাণপণ চেষ্টা চালিয়ে যানঃ

গ্র্যাজুয়েশন শেষ? জব সার্কুলার খুঁজে বেড়াচ্ছেন? আমার নিজস্ব মতামত হলো গ্র্যাজুয়েশন তথা বিবিএ শেষ করার পরপরই জবের জন্যে অবশ্যই আপ্রাণ চেষ্টা করা এবং কাঙ্ক্ষিত জব পেলে এমবিএর জন্য বসে না থেকে জবে জয়েন করে ফেলা অতি উত্তম। এর পেছনে অনেক যুক্তি তথা উদাহরণও আছে। আমি এমন অনেককেরই দেখা পেয়েছি যারা এমবিএ বা মাস্টার্স শেষ করার পর জব নিয়ে ভাবতে শুরু করে এবং ততোদিনে অনেক দেরি হয়ে যায়; যার ফলে অনেককে ক্যারিয়ারে বেশ পিছিয়ে পড়তেও দেখা যায়। শুধু পিছিয়ে পড়াই নয়; উল্টো ক্যারিয়ার প্ল্যানিংয়ের অভাবে অনেককেই হতাশায় ভুগতে দেখা যায়।

কঠিন পরিস্থিতিতেও নিজের প্রতি বিশ্বাস রাখা চাই

কঠিন পরিস্থিতিতেও সাহস হারাবেন নাঃ
এমন কঠিন পরিস্থিতিতে কাউকেই সাহস জোগানোর জন্যও পাশে পাওয়া যায় না। এক সময় হতাশা থেকে জন্ম নেয় বিষণ্ণতা‚ কনফিডেন্ট কমতে শুরু করে; জব প্রস্তুতিতে ব্যাঘাত ঘটে। ফলে অনেকে সামাজিক ও পারিবারিক টানাপোড়েন থেকে নিজেকে রক্ষা করতে পরিকল্পনাহীন কোনরকম একটা চাকরিতে প্রবেশ করেন। কিছুদিন পর সে নিজেকে তার অনেক সহপাঠী, বন্ধু-বান্ধব এমনকী ক্ষেত্রবিশেষ জুনিয়র থেকেও পদ-পদবীতে কিংবা নিম্ন সুবিধা সম্বলিত জবে আবিষ্কার করে। হতাশা আরো প্রবল হতে দেখা যায়। শুরু হয় নতুন করে চাকরির জন্য দৌড়ঝাঁপ! এভাবে অনেকে কাঙ্ক্ষিত ক্যারিয়ার খুঁজে পায়; আবার কারো কারো সংগ্রাম চলতেই থাকে।

আপনার ক্যারিয়ার পরিকল্পনা অনুযায়ী এগিয়ে যানঃ
এবার মূল কথায় আসা যাক; আমি বিশ্বাস করি এখনকার বেশিরভাগ ছেলেমেয়ে গ্র্যাজুয়েশন শেষ হবার অনেক পূর্ব থেকেই ক্যারিয়ার নিয়ে চিন্তা-ভাবনা করা শুরু করে। যা তাদেরকে স্বাভাবিকভাবেই অন্যদের চেয়ে এগিয়ে রাখবে। এমন অনেককেই দেখার সুযোগ হয়েছে- যারা গ্র্যাজুয়েশন শেষ হবার পরপরই বিভিন্ন বহুজাতিক কোম্পানিতে সুযোগ পেয়েছেন। সৌভাগ্যক্রমে চাকরির পাশাপাশি অনেকে এমবিএ বা মাস্টার্সও শেষ করেছেন।

শুরুতে অভিজ্ঞতা অর্জনকে প্রাধান্য দিন এবং সুবিধাজনক সময়ে এমবিএ করে নিনঃ
আবার কেউ বা ভালো জব করছেন কিন্তু এখনো এমবিএ করেননি; সুবিধাজনক সময়ে পরে করে নেবেন বলে ভাবছেন। আবার এমনও হয়েছে যে- বিবিএ শেষ করে ক্যারিয়ার শুরু করে নামকরা কোম্পানির একটি ডিপার্টমেন্টের প্রধান হিসেবে অত্যন্ত সফলভাবে দায়িত্ব পালন করছেন। অভিজ্ঞতার কারণে এমবিএ না করাটা মোটেও ওনার বা ওনাদের জন্য বাধা হয়ে দাঁড়ায়নি।

আমাদের আশেপাশে এমন অনেক উদাহরণ পাওয়া যাবে, যারা এমবিএ বা মাস্টার্স শেষ করার আগেই ক্যারিয়ারের কাঙ্ক্ষিত পথের ঠিকানা পেয়ে গেছেন এবং সফল হয়েছেন। ওই সময় আর পড়াশোনা চালিয়ে যেতে পারেননি। পরে সুবিধাজনক সময়ে এমবিএ করেছেন।

দেশের সবচেয়ে বড় বিদ্যাপীঠের এক অনুজ তার ক্যারিয়ারের সন্ধান পেয়ে এমবিএ কন্টিনিউ না করে বরং চাকরিকেই প্রাধান্য দিয়েছে। এ ব্যাপারে তাকে জিজ্ঞাসা করা হলে তার উত্তর ছিল এমন- “আমি একটি বহুজাতিক কোম্পানিতে চাকরি পেয়েছি, যেখানে আমার নিজ ডিপার্টমেন্ট থেকে এমবিএ শেষ করা সিনিয়র ভাইয়েরা আমার সঙ্গে প্রতিযোগিতায় লড়ছেন এবং অনেকে বাদও পড়েছেন। চাকরিটা ছেড়ে দিয়ে এমবিএ করলে আমি যে আবার এমন বিশ্বখ্যাত বহুজাতিক কোম্পানির লোভনীয় চাকরি পাবো; তার গ্যারান্টি আছে কি? তাই চাকরিটাকেই বেছে নিলাম। এমবিএ পরে সুবিধাজনক সময়ে যেকোনো ভালো বিজনেস ইনস্টিটিউট থেকে করে নেব।“ মজার ব্যাপার হচ্ছে, সেই ছেলেটি তিন বা চার বছর পর এখন আইবিএর এমবিএতে অ্যাডমিশন নিয়েছে এবং সম্প্রতি তার চাকরিতেও প্রমোশন হয়েছে।

সুতরাং কাঙ্ক্ষিত ক্যারিয়ারের ঠিকানার সন্ধান পেয়ে গেলে এমবিএ বা মাস্টার্সের জন্য অপেক্ষা না করাই শ্রেয়। তাতে অভিজ্ঞতা যেমন দ্রুত বাড়ে; সফলতাও আসে দ্রুত।

এতোসবের মধ্যেও নিজেই বানিয়ে নিন আকর্ষণীয় সিভি!!!

সুন্দর হোক সবার ক্যারিয়ারের পথচলা।

Follow me on Facebook . Check out my Website .

Hossain Joy
Hossain Joy
Hossain Joy is a seasoned professional in the corporate world, bringing a wealth of experience and insights to the table. With a successful career spanning 12 years, he has navigated the intricacies of the corporate landscape with resilience and determination. Hossain Joy is not only an accomplished writer but also a mentor who is passionate about sharing the valuable lessons learned throughout his journey. He has authored the inspiring book "Journey to My First Corporate Job," offering a compelling narrative of his early career experiences, challenges, and triumphs. In addition to his book, Hossain Joy extends his reach through a thought-provoking blog, where he imparts practical advice and wisdom gained from years of corporate life. He aims to guide and inspire young professionals, providing them with the tools to navigate their own paths to success. Whether through the written word or personal mentorship, Hossain Joy remains dedicated to empowering the next generation of professionals, fostering a community of growth, resilience, and achievement. Connect with Hossain Joy on Facebook.com/Hossain.Joy for more insights and updates on his journey and upcoming projects.

2 Comments

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *